মূল্যবৃদ্ধি কি স্বাভাবিক নিয়মে পরিণত হয়েছে?
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের অসহনীয় এবং অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে সারা দেশের মানুষের যাপিতজীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে সীমিত আয়ের লোকজন নিদারুণ দুঃখ-কষ্টে একেকটি দিন পার করে চলেছেন; তাদের পরিবারের সদস্যদের জীবনধারণ অসম্ভব হয়ে পড়েছে। কারণ প্রতিদিনই ভোগ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি পাচ্ছে। আজ যে পণ্য যে দরে কিনতে পারা যাচ্ছে, পরদিন বাজারে গেলে সেই একই পণ্য বেশি দাম দিয়ে ক্রেতাদের কিনতে হচ্ছে। আর এ ক্ষেত্রে বিক্রেতাদের বক্তব্য হলো-‘এসব দ্রব্য আগের দিনের তুলনায় আজ বাড়তি দামে তাদের কিনে আনতে হয়েছে’। যদিও তাদের এসব কথা বিশ্বাস করার যুক্তিসংগত কোনো কারণ নেই। কিন্তু এসব নিয়ে তাদের সঙ্গে যুক্তিতর্ক করারও সুযোগ নেই বা এসব করেও কোনো লাভ নেই। কারণ, এ ক্ষেত্রে বিক্রেতা বা ব্যবসায়ীদের কথা বা বক্তব্যই ফাইনাল। ক্রেতা বা ভোক্তা সাধারণ ব্যবসায়ীদের চাহিদামতো মূল্য পরিশোধ না করলে বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য পাওয়া যায় না; কখনো কখনো এসব দ্রব্য বাজার থেকে উধাও হয়ে যায়; ফলে ক্রেতাসাধারণের ভোগান্তি আরও বেড়ে যায়। আর বর্তমান বাজারব্যবস্থায় এভাবেই একশ্রেণির সিন্ডিকেট ব্যবসায়ী দেশের মানুষের পকেট কেটে চলেছে; বাজার সিন্ডিকেটের মাধ্যমে মাঝেমধ্যেই অতি মুনাফা হিসাবে শত শত কোটি টাকা লুটে নেওয়া হচ্ছে।
আমাদের দেশের অতি মুনাফালোভী একশ্রেণির ব্যবসায়ী ব্যবসার নামে যা করে চলেছেন, তাকে ব্যবসা বলা চলে না। কারণ, ব্যবসার নামে তারা দেশের মানুষকে জিম্মি করে টাকা রোজগার করে থাকেন! সাধারণ বা স্বাভাবিক মুনাফা অপেক্ষা দুই-তিনগুণ মুনাফা না করা পর্যন্ত তারা ক্ষান্ত হন না। যে কোনো ধরনের অতি মুনাফা লাভ করাই তাদের উদ্দেশ্য হওয়ায় শাকসবজি থেকে শুরু করে মাছ, মাংস, ডিম, চাল, ডাল, তেল, ওষুধপত্র, ইত্যাদি ক্রয়ের সব ক্ষেত্রেই ভোক্তা সাধারণকে অতিরিক্ত টাকা গুনতে হয়। এ শ্রেণির ব্যবসায়ীর অতি মুনাফালোভী চরিত্রের কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় কোনো দ্রব্যই এখন আর স্বাভাবিক বা ন্যায্যমূল্যে কিনতে পারা যায় না; বাজারে গেলেই ক্রেতাসাধারণকে ঠকতে হয়।