দুদককে নখ-দন্তহীন ব্যাঘ্র বানানো হলো কেন
বর্তমান বাস্তবতায় দেশের উন্নয়নের পথে সবচেয়ে বড় বাধা হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে দুর্নীতি ও পুঁজি লুণ্ঠন। জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৮ দশমিক ১৩ শতাংশে পৌঁছে গিয়েছিল, কিন্তু করোনাভাইরাস মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের তাণ্ডবে এরপর দুই বছর প্রবৃদ্ধির হার কমে গিয়েছিল।
অবশ্য ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির হার আবার ৬ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরতে পারলে এক-দুই বছরেই এই হার আবার ৮ শতাংশ অতিক্রম করবে ইনশা আল্লাহ। এর মানে, বাংলাদেশ তিন দশক ধরে একটি ‘উচ্চ প্রবৃদ্ধির দেশে’ পরিণত হয়েছে। কিন্তু দুর্নীতি এখনো দেশের উন্নয়নের পথে ‘এক নম্বর বাধা’ হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে।
এই পর্যায়ে স্মরণ করছি, ২০০৭-০৮ সালের সামরিক বাহিনী-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় লে. জেনারেল হাসান মশহুদ চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন দুর্নীতি দমন কমিশন যে প্রবল গতিশীলতা অর্জন করেছিল, সে জন্য স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো দুর্নীতিবাজ, পুঁজি-লুটেরা রাজনীতিক ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে ত্রাহি ত্রাহি রব উঠেছিল। দুদকের পাশাপাশি মেজর জেনারেল মতিনের নেতৃত্বাধীন দুর্নীতিবিরোধী শক্তিশালী কমিটিও রাজনীতিবিদ ও রাঘববোয়াল ব্যবসায়ীদের মধ্যে প্রবল ত্রাসের সঞ্চার করেছিল।
ডিজিএফআই এর তদন্ত পরিচালনা করার কারণে রাঘববোয়ালেরা ভয়ে তটস্থ থাকত। দুই বছরে এই দুই ধরনের দুর্নীতিবাজদের যে প্রবল ঝাঁকি দেওয়া সম্ভব হয়েছিল, সেটা দুদকের পরবর্তী চেয়ারম্যান ড. গোলাম রহমান প্রকাশ্যে স্বীকার করেছিলেন। স্বাধীনতার পর ওই সময়টায় দেশে প্রথমবারের মতো কোনো সরকারকে দুর্নীতি দমনে সত্যিকার নিষ্ঠাবান মনে হয়েছিল আমার কাছে। আমার বেশ কয়েকটি লেখায় নির্দ্বিধায় তা স্বীকার করেছি।