আগামীর কৃষিতে চ্যালেঞ্জ
অনেক প্রতিকূলতা, প্রতিবন্ধকতা ও ঝুঁকির পরেও আমাদের দেশে খাদ্যশস্য উৎপাদনের গতি বেশ ভালো। কৃষক শত সংকটের মধ্যেও একভাবে উতরে যাচ্ছেন, ফসলের ফলন ভালো হচ্ছে। দু-তিন বছরে ধানের সব কটি মৌসুমেই ভালো ফলন পেয়েছেন কৃষক। অন্যান্য ফল-ফসলের ফলনের হারও খারাপ নয়।
এ কথা সত্যি, পাঁচ-ছয় বছর ধরে শুধু কৃষি নয়, সব ক্ষেত্রেই জলবায়ু সম্পর্কে আমাদের টনক নড়েছে। সারা বিশ্বেই জলবায়ু বিষয়টি এখন সবচেয়ে আলোচিত এবং এক নম্বর ইস্যু হিসেবে গণ্য। আর এই ইস্যুতে আমরা আছি সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জায়গায়। বিপর্যয় সহনশীলতার প্রশ্নে আমাদের কৃতিত্ব দৃষ্টান্তমূলক। তবে দিনের পর দিন আমাদের ঝুঁকি বাড়ছে।
উদ্বেগ বাড়ছে। বন্যা, লবণাক্ততা, খরা, ভূমিকম্পের ঝুঁকি সারাক্ষণই তাড়া করে ফিরছে। বেশি উদ্বেগের কারণ হলো, এসব বড় বিপর্যয় মোকাবিলা করার মতো শক্তি-সামর্থ্য বা প্রস্তুতি কোনো কিছুই আমাদের নেই। বড় চিন্তা জনসংখ্যা ও তাদের মুখের খাবার নিয়ে। এই ছোট্ট দেশের বিপুল জনগণ এখনো খাচ্ছে-দাচ্ছে, ঠিকমতো টিকে আছে। দুশ্চিন্তা-হতাশা আছে। এরপরও একেবারে করুণ কোনো দশায় পড়তে হচ্ছে না। কিন্তু সারা পৃথিবীই যেখানে জলবায়ুঝুঁকিতে সংকটাপন্ন, সেখানে আমাদের অবস্থানটি একটু বেশিই দুশ্চিন্তায় ফেলার মতো।
আমরা ভূপৃষ্ঠের অভ্যন্তরে এবং ওপরে—দুদিকেই বিপদের দিকে ধাবিত হচ্ছি। আন্তর্জাতিক সমীক্ষার তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান হচ্ছে বন্যার ঝুঁকিতে প্রথম, সুনামিতে তৃতীয় এবং ঘূর্ণিঝড়ে ষষ্ঠ; যা বাংলাদেশের মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলছে। উপকূলীয় অঞ্চলে লবণাক্ততা আবাদি জমি নষ্ট করছে এবং বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে।