তামাকমুক্ত বাংলাদেশ: ধূমপান বন্ধে ও মৃত্যুহার কমাতে ভূমিকা রাখবে প্রযুক্তি
বাংলাদেশে অসংক্রামক রোগ (এনসিডি) দ্রুত মাত্রায় বৃদ্ধি পেয়ে চলছে, যার ফলে মৃত্যুহার প্রায় ৬৮ শতাংশ এবং হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক, দীর্ঘস্থায়ী ফুসফুসের রোগ, ক্যান্সার, ডায়াবেটিসের মতো রোগের ঝুঁকিও প্রায় ৬৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ২০ শতাংশ উচ্চ রক্তচাপ, ১০ শতাংশ ডায়াবেটিস রোগে এবং প্রায় ২ মিলিয়নের মতো মানুষ প্রতি বছর ক্যান্সারে ভুগছেন যেখানে বার্ষিক প্রায় ৫০,০০০ নতুন রোগী এই তালিকায় যোগদান করছেন।
চলতি বছরের জুনে প্রকাশিত এনসিডি কন্ট্রোল ইউনিটের পরিচালনায় ডিরেক্টরেট জেনারেল অব হেলথ সার্ভিসেস-এ (ডিজিএইচএস) একটি সমীক্ষায় মতে, ২০১৮ সালের তুলনায় বর্তমানে দেশে এনসিডি’র ঝুঁকির মাত্রা উর্ধ্বমূখী, যেখানে ৪৪.৯ শতাংশ জনসংখ্যা ধূমপান অথবা ধোঁয়াবিহীন তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার করে। দেশে প্রায় ৬২ লক্ষ প্রাপ্তবয়স্ক ধূমপায়ী রয়েছে এবং তাদের স্বাস্থ্যসুরক্ষায় নিত্যনতুন উদ্ভাবনী পদক্ষেপ এবং বৈজ্ঞানিকভাবে ক্ষতি কমানোর বিকল্প পদ্ধতি গ্রহণ করা এখন সময়ের দাবি।
ধূমপানের ফলে প্রাথমিক স্বাস্থ্যঝুঁকি মূলত তামাকের দহন থেকেই উৎপন্ন হয়। সাম্প্রতিক সময়ে নিকোটিন এবং এর সম্ভাব্য স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ে একটি বিতর্কের সূচনা হয়েছে। ভুল তথ্য এবং সচেতনতার অভাবে নিকোটিনের প্রভাব এবং দহনের সাথে এর প্রকৃত সম্পর্কটি সকলের বোধগম্য হতে ব্যর্থ হয়েছে, যা মানব স্বাস্থ্যের উপর এর প্রভাব সম্পর্কে ভুল ধারণার জন্ম দিয়েছে। আমাদের জানা উচিত নিকোটিন শুধু একটি আসক্তি মাত্র এবং এটি কোন রোগের কারণ নয়। ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব হেলথ অ্যান্ড হিউম্যান সার্ভিসেস-এর এক গবেষণা মতে, ধূমপানের সময় দহন প্রক্রিয়ার সরাসরি ফলাফল হলো কার্বন মনোক্সাইড, টার এবং কার্সিনোজেন ইত্যাদি বিভিন্ন বিষাক্ত পদার্থ যা মানবস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। নিকোটিন ও ধূমপানের দহন প্রক্রিয়া দ্বারা সৃষ্ট ক্ষতিকারক প্রভাবগুলোর মধ্যে পার্থক্য করা প্রয়োজন। এমতাবস্থায় সমাজে সচেতনতা বৃদ্ধি কিংবা ক্ষতিহ্রাসকারী বিকল্পগুলো সহজলভ্য করার মাধ্যমে নিকোটিন সেবনকারীদের ক্ষতিকারক টক্সিন গ্রহণের মাত্রা কমানো সম্ভব।
- ট্যাগ:
- মতামত
- ধূমপান
- স্বাস্থ্য ঝুঁকি
- অসংক্রামক রোগ