বঙ্গবন্ধুর চেতনা আমাদের প্রেরণা

ডেইলি স্টার তোফায়েল আহমেদ প্রকাশিত: ১৫ আগস্ট ২০২৩, ১০:২৮

যার জন্ম না হলে এ দেশ স্বাধীন হতো না এবং আজও আমরা পাকিস্তানের দাসত্বের নিগড়ে আবদ্ধ থাকতাম, ইতিহাসের মহামানব সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি দুনিয়ার নির্যাতিত-নিপীড়িত মানুষের শ্রেষ্ঠবন্ধু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে আমরা এই আগস্ট মাসে হারিয়েছি। শোকাবহ আগস্টের সেই কালরাতে ঘাতকের নির্মম বুলেটে প্রাণ হারিয়েছেন বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিবসহ জাতির পিতার পরিবারের অন্যান্য সদস্যগণ-তাদের সকলকে বিনম্র শ্রদ্ধায় স্মরণ করি।


বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সাহচর্যে আসার দুর্লভ সৌভাগ্য আমার হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর কাছেই শুনেছি, তিনি বলেছিলেন, 'পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর উপলব্ধি করেছি, এই পাকিস্তান বাঙালিদের জন্য হয় নাই। একদিন বাংলার ভাগ্যনিয়ন্তা বাঙালিদেরই হতে হবে।' সেই লক্ষ্য সামনে নিয়ে জেল-জুলুম, অত্যাচার-নির্যাতন সহ্য করেছেন। কোনোদিন মাথা নত করেননি। বঙ্গবন্ধুর রাজনীতির মূল লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও স্বাধীন বাংলাদেশকে সোনার বাংলায় রূপান্তরিত করা। গর্ব করে বলতেন, 'আমার বাংলা হবে রূপসী বাংলা, আমার বাংলাদেশ হবে সোনার বাংলা, আমার বাংলাদেশ হবে প্রাচ্যের সুইজারল্যান্ড।' আজ তিনি টুঙ্গিপাড়ার কবরে শায়িত। আর কোনোদিন ফিরে আসবেন না, দরদী কণ্ঠে ডাকবেন না 'ভাইয়েরা আমার' বলে। বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি আমাকে আন্দোলিত করে। বঙ্গবন্ধুর চেতনা আমাদের চলার পথের প্রেরণা। '৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আমরা যখন বঙ্গবন্ধুকে কারামুক্ত করে ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে (সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) সংবর্ধনা দিয়ে কৃতজ্ঞ জাতির পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞচিত্তে 'বঙ্গবন্ধু' উপাধিতে ভূষিত করেছিলাম, সেই থেকে শেষদিন পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর পাশে ছিলাম। '৬৯-এর পর বঙ্গবন্ধু যতো রাজনৈতিক সফর করেছেন আমি সফরসঙ্গী হয়েছি। '৭০-এর নির্বাচনের আগে ভোলাসহ দেশের উপকূলীয় অঞ্চল ঘূর্ণিঝড়-জলোচ্ছ্বাসে ভেসে গিয়েছিল। ১০ লক্ষাধিক মানুষ মৃত্যুবরণ করেছিল। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে বঙ্গবন্ধু ছুটে গিয়েছেন, অশ্রুসজল চোখে বলেছেন, 'আমাকে এখান থেকে নিয়ে চল্। আমি আর পারি না।' ভোলা থেকে ফিরে শাহবাগ হোটেলে-'বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়'-দুই শতাধিক দেশি-বিদেশি সাংবাদিকের উপস্থিতিতে বলেছেন, 'প্রতিবছর ঘূর্ণিঝড় প্রাকৃতিক দুর্যোগে লক্ষ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়, আর আমরা এভাবে মরতে চাই না। আমরা বাঙালিরা বাংলার ভাগ্যনিয়ন্তা হতে চাই।'


'রাষ্ট্র বনাম শেখ মুজিব ও অন্যান্য' তথা আগরতলা মামলার অন্যতম আসামি সাবেক ডেপুটি স্পিকার প্রয়াত কর্নেল শওকত আলী সাহেবের কাছে শুনেছি, যেদিন আগরতলা মামলার বিচার শুরু হয়, সেদিন ওই মামলার আসামিদের সাথে প্রিজন ভ্যানে উঠে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, 'আমার সাথে কণ্ঠ মিলাও।' এই বলে তিনি গেয়েছিলেন দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের সেই বিখ্যাত গান, 'ধন ধান্য পুষ্প ভরা আমাদের এই বসুন্ধরা, তাহার মাঝে আছে দেশ এক সকল দেশের সেরা...।' দেশ স্বাধীনের পর বঙ্গবন্ধু এই গানটিকে 'জাতীয় গীত' হিসেবে অভিহিত করেন। শওকত সাহেব বঙ্গবন্ধুকে বলেন, 'মুজিব ভাই, আমাদের তো ফাঁসি হবে, আপনি কী করেন।' বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, 'ঘাবড়াবার কিছু নাই। ওরা আমাদের ফাঁসি দেওয়ার মতো ক্ষমতা রাখে না। এই মামলা আমরা মোকাবেলা করবো। আমাদের বিচার শুরু হবে। দেশের মানুষ এই বিচারের বিরুদ্ধে প্রচণ্ড আন্দোলন করবে। ছাত্র-জনতা জেগে উঠবে। সেই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমরা মুক্তিলাভ করবো। মুক্তিলাভের পর দেশে নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচনে আমরা বিজয়ী হবো। কিন্তু বিজয়ের পর ওরা আমাদের ক্ষমতা দেবে না। ক্ষমতা না দিয়ে ওরা আমাদের উপর গণহত্যা চালাবে। তখন বাংলার মানুষ সর্বব্যাপী মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়বে।' সেদিন তিনি যা বলেছিলেন, পরে তাই ঘটেছিল। তাকে ফাঁসিতে হত্যার পরিকল্পনা হয়েছিল। জাগ্রত ছাত্র-জনতা গণআন্দোলন-গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টি করে বঙ্গবন্ধুসহ সকল বন্দিকে কারামুক্ত করেছিল।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত

আরও