করোনা ঠেকানো গেল ডেঙ্গু নয় কেন?
বাংলাদেশ করোনা সংক্রমণ খুব সফলভাবে মোকাবিলা করেছে। মানুষ থেকে মানুষের ছড়ানো এ ভাইরাসটি মোকাবিলা করা খুব চ্যালেঞ্জিং ছিল। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা ও বাংলাদেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে করোনার বিরুদ্ধে জয়ী হতে পেরেছে বাংলাদেশ। দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকা পরিচিত শত্রু এডিস মশা এবং তার দ্বারা সংক্রমিত রোগ ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া। ২০০০ সাল থেকে শুরু করে বর্তমান সময় পর্যন্ত প্রায় প্রতি বছরই কম-বেশি ডেঙ্গু হয়েছে। ডেঙ্গু ও এর বাহক মশা সম্বন্ধে আমরা সবাই অবগত এবং এর নিয়ন্ত্রণব্যবস্থাও আমাদের জানা। তারপরও আমরা কেন ব্যর্থ হচ্ছি ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে?
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ব গবেষণাগার সব সময়ই মশা ও মশাবাহিত রোগ নিয়ে গবেষণা করে। আমরা ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা, এডিস মশার ঘনত্ব, বৃষ্টিপাত, তাপমাত্রা, আর্দ্রতা এ কয়েকটি বিষয়কে নিয়ে মাল্টিভেরিয়েট অ্যানালাইসিস করে ফোরকাস্টিং মডেল তৈরি করি। যার মাধ্যমে ডেঙ্গু সম্বন্ধে আগাম ধারণা দিতে পারি। আগেই বলেছি, এ বছর ডেঙ্গু পরিস্থিতি খারাপ হবে। আগামী দিনগুলোতে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা আরও বাড়বে। শুধু ঢাকা নয়, দেশের প্রায় প্রতিটি জেলায় ডেঙ্গুর সংক্রমণ বাড়বে আগস্ট-সেপ্টেম্বরে।
ডেঙ্গুর সংক্রমণ শুধু বাংলাদেশে হচ্ছে ব্যাপারটি এমন নয়। এ বছর ইতিমধ্যে লক্ষাধিক মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে ব্রাজিল, বলিভিয়া, পেরু ও আর্জেন্টিনায়। এশিয়া মহাদেশের মধ্যে মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন, শ্রীলঙ্কায়ও আক্রান্তের সংখ্যা বাংলাদেশের চেয়ে অনেক বেশি। সাম্প্রতিক দশকে বিশ্বজুড়ে ডেঙ্গুর প্রকোপ নাটকীয়ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০০০ সাল থেকে বর্তমান সময়ে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেড়েছে ১০ গুণ। পৃথিবীর অর্ধেক মানুষ ডেঙ্গু সংক্রমণ ঝুঁকিতে রয়েছে বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সতর্কতা জারি করেছে।