অন্যের আকাঙ্ক্ষা নয়, নিজের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিন
মিয়া হ্যাম। দুইবার বিশ্বকাপজয়ী আমেরিকান প্রমীলা ফুটবলার। নানা সময়ে দেওয়া তাঁর বয়ান ও সাক্ষাৎকারের চুম্বক অংশ অনুবাদ করেছেন মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ
ছোটবেলা থেকেই একটু অন্যরকম ছিলাম আমি। নিজের কাজ বলা যায় নিজেই করতাম। অন্যের দিকে চেয়ে থাকতাম না। এটা খুব ভালো কাজে দিয়েছে। নিজেকে খুব ভালোভাবেই নিজের কাছে উপস্থাপন করতে শিখে গেছি ছোটবেলায়ই। ফলে মাধ্যমিকে পড়ার দিনগুলোতে আরও কঠোর অনুশীলন শুরু করি। এই অনুশীলনই আমাকে নতুন পথের সন্ধান দিয়েছে। মানে খুব অল্প সময়েই আমি জাতীয় দলে জায়গা করে নিয়েছি। ভাবলে অবাক হবেন, তখন আমার বয়স ছিল মাত্র ১৫ বছর। ফলে জায়গাটি ধরে রাখার প্রত্যয় ছিল মনে। এর জন্য বাড়িয়েছি পরিশ্রমের মাত্রা। এখন ভাবলে অবাকই লাগে যে কতটা পরিশ্রম করেছি তখন। আসলে পরিশ্রম ছাড়া কোনো কিছুতেই সফলতা আসে না। ধরে রাখা যায় না সাফল্যও!
বড় হয়ে কী হবে... মনে পড়ে, সেই মাধ্যমিক থেকেই আশপাশের মানুষ জিজ্ঞেস করত ভবিষ্যতের কথা। আমি কিছু বলতাম না। ইচ্ছে করেই। তবে যখন অনেক সহপাঠীই ‘বড় হয়ে কী হবে’– এমন ভাবনায় অস্থির, ততদিনে আমি ঠিক করে নিয়েছিলাম নিজের গন্তব্য। কাছের বন্ধুদেরও বলেছি, ফুটবলই গন্তব্য আমার! এই গন্তব্যের পথে ছুটে চলার জন্য এবং পথটা পাড়ি দেওয়ার জন্য আমি নারী-পুরুষ– দুই দলের সঙ্গেই অনুশীলন করতাম। তা আমাকে জাতীয় দলের হয়ে দীর্ঘদিন খেলতে সাহায্য করেছে।
নিজের ইচ্ছাকে প্রাধান্য শুরুতে ফুটবলের পাশাপাশি বাস্কেটবলও খেলতাম। নিজের পথ বেছে নিতে আমাকে খুব বেশি বেগ পোহাতে হয়নি; কেননা, শুরুতেই বুঝে গিয়েছিলাম, দুটি কাজ করতে পারাই যথেষ্ট। প্রথমত, নিজের অন্তরের ডাক শোনা; দ্বিতীয়ত, সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলা। যখনই এ কাজ দুটি করে ফেলতে পেরেছি, ফুটবলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়ে গেছে আপনা-আপনি। বলি, এ ক্ষেত্রে অন্য কারও আকাঙ্ক্ষা পূরণের চেয়ে বরং নিজের ইচ্ছাকেই প্রাধান্য দেওয়া উচিত। আমি অন্তত এমনটাই করেছিলাম।
নিজের ইচ্ছাকে প্রাধান্য খেলাধুলার জগৎটি দিন দিন অনেক হিসাবনিকাশের হয়ে উঠেছে আমার কাছে। তাই বলে এতে যে কোনো আনন্দই নেই– তা কিন্তু নয়। যে কোনো চাপ এড়িয়ে, মাঠে ও মাঠের বাইরে প্রতিটি মুহূর্ত নিজের মতো উপভোগ করতে পারা একজন ফুটবলারের জন্য বিশেষ গুণ বলে মনে করি আমি! ফুটবলের মতোই জীবন। তাই জীবনকেও উপভোগ করতে শিখুন!