জীবন এক শিক্ষা সফরের নাম
জীবন এক শিক্ষা সফরের নাম। বিচ্ছিন্নভাবে হলেও এখানে প্রতিনিয়ত অভিজ্ঞতার সঞ্চরণ ঘটে। গেলো বছর এমনই এক অভিজ্ঞতা জুটেছে। সচরাচর ঈদের সময়টায় বাড়ি ফেরা মানুষের ঢল নামে। যার কারণে টিকিট পাওয়া কিংবা হঠাৎ করে উঠে যাওয়া উচ্চমূল্য, দুই-ই যাত্রীদের মুশকিলের সম্মুখীন করে। এ কারণে দুঃসাহসিক তরুণ, যুবকেরা মোটরযান নিয়েই বাড়ির পথে রওনা হয়ে যান। তবে এটা ভীষণ ঝুঁকিপূর্ণ। এই টিকিট জটিলতা ও তারুণ্যের অবাধ্য সাহস নিজেকেও একবার এমন পরিস্থিতির ভেতর দিয়ে নিয়ে গিয়েছিল।
ঢাকা থেকে বাড়ির পথের দীর্ঘ যাত্রায় প্রচণ্ড রোদ ও ধুলাবালিতে ক্লান্তিকর অবস্থা তৈরি হয়। এ জন্য সামান্য প্রশান্তির জন্য পথের ধারে অবস্থিত মসজিদের উঠোনে ছায়ায় দাঁড়াই। পাশে থাকা ওজুখানায় মুখে-চোখে পানি দেই। সেখানেই জোটে অভিজ্ঞতা। মসজিদের বারান্দা পরিচ্ছন্নতাকারী এক ব্যক্তি ওজুখানা ব্যবহারের বিনিময়ে পয়সা দাবি করে বসেন। বিস্মিত হয়ে বলেছি, এটা তো মসজিদ; গণশৌচাগার নয়। এরপর শুরু হয় তার বীতশ্রদ্ধ আচরণ। অথচ সর্বত্রই মসজিদ, মাদ্রাসা কেন্দ্রিক খাদেম, হুজুরবৃন্দের ব্যবহার প্রশংসনীয়।
কিছু দিন পূর্বে বাংলা ট্রিবিউনে শৌচাগার বিষয়ক সিরিজ অনুসন্ধান ও বাস্তবতা তুলে ধরা হয়েছিল। এ জন্যই এই বিষয়টিকে তুলে ধরা। কারণ, প্রয়োজনের সঙ্গে মানুষের অপ্রয়োজনীয় ব্যবহারটুকুও তুলে ধরা জরুরি।
শৈশবে মক্তবে হুজুরের সুরেলা কণ্ঠের কায়দা পড়া, আমপারা পড়া এবং পরম যত্নে আল্লাহর প্রতি আনুগত্য শেখানোর মমত্ববোধের বিপরীতে সেই ব্যক্তির পয়সা কেন্দ্রিক আচরণ সম্পূর্ণ বৈপরীত্য সৃষ্টি করে। এ জন্য অবশ্য একশ্রেণির নব্য ধনীরা দায়ী। রাতারাতি পয়সা কামিয়ে নিজেদের পাপ মোচন ও পুণ্যের আশায় অপরিকল্পিতভাবে মসজিদ, মাদ্রাসা গড়ে তুলছেন। দান কিংবা স্থাপনা নির্মাণ শেষে একবার ছবি তোলা, খবর প্রচার শেষ হয়ে গেলে প্রতিষ্ঠাকারী নিরুদ্দেশ। এরপর সেখানে কীভাবে কী চলছে, কোনও খোঁজ নেই।
- ট্যাগ:
- মতামত
- ঈদে বাড়ি ফেরা