বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর আন্তর্জাতিক ঋণ সুবিধা কমে যাচ্ছে
দেশের ব্যাংকগুলোর বৈদেশিক বাণিজ্যে সবচেয়ে বড় সহযোগী ধরা হয় বহুজাতিক স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের মাশরেক ব্যাংককে। দেশের আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ভূমিকা রাখছে ব্যাংক দুটি। বেসরকারি খাতের বিদেশী ঋণের উল্লেখযোগ্য অংশেরও জোগান দিচ্ছে এ দুই ব্যাংক। বর্তমানে দুটি ব্যাংকের সঙ্গেই সম্পর্ক ভালো যাচ্ছে না বাংলাদেশী বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর। প্রভাবশালী দুটি ব্যাংকই বাংলাদেশে তাদের ব্যবসায়িক পরিধি সংকুচিত করেছে। দেশের ব্যাংকগুলোর বৈদেশিক বাণিজ্যের ঋণ স্থিতি কমিয়ে দিচ্ছে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ও মাশরেক ব্যাংক। আবার দেশের বেসরকারি খাতে দেয়া ঋণের মেয়াদও আর বাড়ানো হচ্ছে না।
একই পথে হাঁটছে বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোর ঋণপত্রের (এলসি) নিশ্চয়তা দেয়া অন্য বিদেশী ব্যাংকগুলোও। সম্প্রতি বাংলাদেশের তিনটি ব্যাংকের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক স্থগিত করেছে সিঙ্গাপুরের ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক অব সিঙ্গাপুর (ডিবিএস)। বাংলাদেশের ১৩টি ব্যাংকের সঙ্গে করেসপন্ডিং সম্পর্ক রয়েছে ডিবিএসের। এর মধ্যে তিনটির সঙ্গে সম্পর্ক স্থগিতের পাশাপাশি বাকিদের ঋণসীমা (ক্রেডিট লাইন) কমিয়ে দিয়েছে সিঙ্গাপুরের বৃহৎ ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানটি।
সম্পর্ক সীমিত করে আনছে প্রতিবেশী ভারতের ব্যাংকগুলোও। স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া দেশটির অন্য ব্যাংকগুলোকে বলেছে, ‘নস্ট্রো’ হিসেবে ১২ লাখ ডলার জমা না থাকলে বাংলাদেশের কোনো ব্যাংকের এলসি খোলা যাবে না। মৌখিকভাবে ভারতের সব ব্যাংককে এ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার নির্দেশনা মেনে বাংলাদেশে ব্যবসায়িক সম্পর্ক সীমিত করছে দেশটির অন্য ব্যাংকগুলোও। এ তালিকায় ভারতের আইসিআইসিআই ব্যাংক লিমিটেড ও এক্সিস ব্যাংক লিমিটেডও রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী ব্যাংক জেপি মরগানও বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোর এলসি নেয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। বাংলাদেশে ব্যবসায়িক কার্যক্রম সীমিত করছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের অন্য ব্যাংকগুলোও। এ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের ডলার সংকট আরো তীব্র হয়ে ওঠার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।