উচ্চ রক্তচাপ সম্পর্কে যা জানা জরুরি
আজ ১৭ মে বিশ্ব উচ্চ রক্তচাপ দিবস। উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি ও এ থেকে সুস্থ থাকার উপায় সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে প্রতি বছর পালিত হয় দিবসটি। এবছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘সঠিকভাবে রক্তচাপ মাপুন, নিয়ন্ত্রণে রাখুন এবং দীর্ঘজীবী হোন।’
একসময় উচ্চ রক্তচাপকে বয়স্কদের রোগ ভাবা হতো। তবে এখন কমবয়সীরাও আক্রান্ত হচ্ছেন এই রোগে। বিভিন্ন কারণে দিন দিন বাড়ছে উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি। বাংলাদেশে প্রাপ্তবয়স্কদের প্রতি পাঁচ জনে একজন ভুগছেন উচ্চ রক্তচাপে। উপসর্গ, ঝুঁকি ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে করণীয় সম্পর্কে জানাচ্ছেন ন্যাশনাল হেলথকেয়ার নেটওয়ার্ক আদাবর শাখার পরিচালক কার্ডিওলজিস্ট ডা. মোহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জামান।
কখন বুঝবেন উচ্চ রক্তচাপ?
প্রাপ্তবয়স্কদের রক্তচাপের স্বাভাবিক মাত্রা ১২০/৮০। বয়স ভেদে এই মাত্রা সামান্য এদিক-সেদিক হতে পারে। কিন্তু যাদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা আছে, তাদের ক্ষেত্রে এই মাত্রা বেশ অনেকটাই বেড়ে যায়। টানা দুইদিন ১৪০/৯০ মাত্রার প্রেসার থাকলে ধরে নেওয়া হয় তিনি উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন।
উপসর্গ কী কী?
অনেক ক্ষেত্রেই কোনও লক্ষণ বা উপসর্গ থাকে না। ফলে এই নীরব ঘাতককে চিনে নিতে বেগ পেতে হয়। উচ্চ রক্তচাপের উপসর্গ হতে পারে অস্বস্তি বা ঘাড়ে ব্যথা। ঘুমের সমস্যা ও দুর্বলতাও থাকতে পারে। তবে ঘাড় ব্যথার কারণেই বেশিরভাগ রোগী রক্তচাপ পরীক্ষা করাতে আসেন।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে না থাকলে কী ধরনের জটিলতা হতে পারে?
উচ্চ রক্তচাপ সুপ্ত অবস্থায় থেকে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের ক্ষতির কারণ হতে পারে। হার্ট অ্যাটাকের কারণ হতে পারে অনিয়ন্ত্রিত রক্তচাপ। স্ট্রোক বা মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ, কিডনি বিকল হয়ে যাওয়া কিংবা শরীরের কোনও অংশ অবশ হয়ে যাওয়ার মতো জটিলতা দেখা দিতে পারে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে না থাকলে। এছাড়া স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে চোখের রেটিনা।
কারা ঝুঁকিতে?
যেকোনো বয়সীরাই আক্রান্ত হতে পারেন উচ্চ রক্তচাপে। তবে পরিবারের অন্য সদস্যদের থাকলে বেড়ে যায় এর ঝুঁকি। এছাড়া ওবেসিটি বা স্থূলতা বাড়িয়ে দেয় এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি। অন্যান্য রোগ যেমন ডায়াবেটিস থাকলে বা কোলেস্টেরল থাকলেও উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায় অনেকাংশে। ধূমপান, মদ্যপান, অতিরিক্ত লবণ খাওয়া হতে পারে উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত হওয়ার কারণ।
কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন?
অলস জীবনযাপন করা যাবে না। সুস্থ থাকতে চাইলে কায়িক শ্রমের বিকল্প নেই। জীবনযাপন পদ্ধতিতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার মাধ্যমে এই রোগের ঝুঁকি থেকে দূরে থাকা সম্ভব। এক্ষেত্রে শরীরচর্চা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সপ্তাহে ৫ দিন শরীরচর্চা করলে ওষুধেরও প্রয়োজন হয় না বেশিরভাগ ক্ষেত্রে। খাদ্যাভ্যাসেরও রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। শাকসবজি ও ফল রাখবেন খাবার পাতে। ধূমপান, মদ্যপান থেকে দূরে থাকা জরুরি। স্থূলতা রোগে ভুগলে ওজন কমাতে হবে। অতিরিক্ত লবণ খাওয়া যাবে না খাবারের সঙ্গে।
- ট্যাগ:
- স্বাস্থ্য
- বিশ্ব উচ্চ রক্তচাপ দিবস