ঈদ শেষ, খাদ্যাভ্যাস বদলানোর এখনই সময়
শেষ হলো রোজা আর ঈদ। রমজান মাসে নানা ধরনের ভাজা-ভুনা খাওয়া হয়েছে, ঈদের কদিনও ঢের খেয়েছেন হয়তো। রক্তে তাই চর্বির ঘনত্ব বেড়েছে। এর সঙ্গে বাড়তে পারে ব্লাডপ্রেশার, দেখা দিতে পারে পানিশূন্যতা, হতে পারে অ্যাসিডিটি বা হজমে সমস্যা। ঈদের পরের এই সময়ে তাই খাদ্যতালিকায় পরিবর্তন আনতে হবে। খাওয়াদাওয়ার লাগাম এবার টেনে ধরুন। নিয়ম মেনে ডায়েট শুরু করতে হবে এখন।
ঈদের সময় বাড়তি খাবার খেলে মেদভুঁড়ি কিংবা ওজন বেড়ে যায়। এক মাস পর খাবার ও জীবনযাপনের পরিবর্তন হতে শুরু করবে এখন। ফলে হজমপ্রক্রিয়ারও পরিবর্তন হচ্ছে। ঈদ–পরবর্তী এ সময়ে অনেকে মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়েন। ঈদে না চাইলেও মিষ্টিজাতীয় খাবার, বেশি তেল, ঘি ও মসলা দিয়ে রান্না করা খাবার খাওয়া হয়। ফলে পরিবারের বয়স্ক ব্যক্তিদের পাশাপাশি ডায়াবেটিস, হৃদ্রোগ ও কিডনি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা পড়েন বিপাকে।
সেই সঙ্গে আছে গরমের দাপট। প্রচণ্ড দাবদাহে মানুষের নাজেহাল অবস্থা। অত্যধিক তাপ বিরক্তি উৎপাদন করে, একাগ্রতার অভাব ঘটায়, সৃষ্টি করে অবসাদ। গরম ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায় ও নানা শারীরিক জটিলতা তৈরি করে। আমাদের জীবনযাপন ও খাদ্যাভাসের কিছু পরিবর্তন আনলে এই গ্রীষ্মেও অনেকটা সতেজ থাকা সম্ভব। খাবারদাবার নির্বাচনেও কৌশলী হওয়া জরুরি।
- গরমে ঘামের মাধ্যমে শরীর থেকে প্রচুর লবণ ও পানি বের হয়ে যায়। সে জন্য গ্রীষ্মের এই গরমে প্রতিদিন আড়াই থেকে তিন লিটার পানি পান করতে হবে। পাশাপাশি খাওয়ার স্যালাইন, লেবুপানি বা কচি ডাবের পানি পান করতে পারেন। শহর ও শহরতলির বিভিন্ন জায়গায় লেবুর শরবত, বিভিন্ন ফলের শরবত বিক্রি করতে দেখা যায়। সেগুলো একেবারে বর্জন করে চলতে হবে। কারণ, এই রস বা শরবত নানা শারীরিক জটিলতা তৈরি করতে পারে।
- এই ঋতুতে বিভিন্ন ফল পাওয়া যায়। সে জন্য এ সময় প্রচুর পানিযুক্ত ফল, যেমন আম, জাম, তরমুজ, জামরুল, তালশাঁস, বাঙ্গি, পাকা পেঁপে, বেল খেতে পারেন। বিভিন্ন ফলের জুস বা স্মুদি করে সকাল বা বিকেলের নাশতায় রাখতে পারেন।
- এ সময় শারীরিকভাবে সুস্থ থাকতে অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার, লাল মাংস, তেলে ভাজা খাবার, বাইরের ফাস্ট ফুড বা অন্যান্য অস্বাস্থ্যকর খাবারের পরিবর্তে মৌসুমি শাকসবজি, ফলমূল, মাছ ও মুরগির মাংস খাদ্যতালিকায় রাখতে হবে।
- যেহেতু ঈদে প্রচুর গুরুপাক খাবার খাওয়া হয়, তাই ঈদের পরে সকাল বা দুপুরের খাবারে কম তেল-মসলা দিয়ে রান্না করা মিশ্র সবজি বা সেদ্ধ করা সবজি রাখতে পারেন। আবার রাতে কম তেল-মসলা দিয়ে সবজি, মুরগি বা সবজি-চিকেন স্যুপ পাতলা করে রান্না করে খেতে পারেন।
- দুপুরের খাবার বা বিকেলের নাশতায় সালাদ রাখতে হবে। শসা, পুদিনা শরীর ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। পাশাপাশি টক দইও বেশ কার্যকর। সে জন্য শসার সালাদে টক দই ব্যবহার করতে পারেন। রাতে ঘুমের আগে খেতে পারেন টক দই। সকালে রুটি-সবজির পরিবর্তে দই, চিড়া ও কলা রাখতে পারেন।
- গরমে খিচুড়ি, তেলে ভাজা পরোটা, পোলাও, বিরিয়ানির পরিবর্তে সাদা ভাত খাওয়া ভালো। সঙ্গে পাতলা ডাল, মাছ বা মাংসের সঙ্গে সবজি দিয়ে রান্না করা পাতলা ঝোল, সবজি ও সালাদ খেতে হবে।
ঈদের সময় শরীর অতিরিক্ত যে ক্যালরি গ্রহণ করেছে, সেই ক্যালরি যেন বার্ন করা সহজ হয়, সেভাবে খাবার নির্বাচন করুন।
- ট্যাগ:
- স্বাস্থ্য
- সুস্থ থাকা
- খাদ্যাভাস