তদারককারী সংস্থাগুলো দায় নেয় না

সমকাল প্রকাশিত: ০৯ মার্চ ২০২৩, ১২:২৫

পুরান ঢাকায় ২০১০ সালের ৩ জুন নিমতলী ট্র্যাজেডির কথা ভুলে যাওয়ার কথা নয়। সেই আগুনে পুড়ে লাশ হয়েছিলেন ১২৪ জন। ২০১৯ সালের চকবাজারের চুড়িহাট্টার ওয়াহিদ ম্যানশন ট্র্যাজেডি কেড়ে নিয়েছিল ৭১টি তাজা প্রাণ। এর আগে-পরে ঘটেছে আরও অনেক নির্মম দুর্ঘটনা। কিন্তু সেবাদানকারী সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থাগুলো সজাগ হয়নি। দায়ও নিতে চায় না তারা। সচেতন হননি গ্রাহকরাও। ফলে অকালমৃত্যুও থেমে নেই।


কোথাও কেমিক্যালের গোডাউনে আগুন বা কখনও গ্যাসের বিস্ফোরণে অকাতরে যাচ্ছে প্রাণ। একটার পর একটা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হচ্ছে ভবন। এরই সর্বশেষ ট্র্যাজেডি সিদ্দিকবাজারের নর্থ সাউথ রোডের পৌর ভবন। বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত এ ট্র্যাজেডিতেও মারা গেছেন ১৯ জন। আহত আরও অনেকে। কিন্তু বারবার ঘটে যাওয়া এসব ট্র্যাজেডির দায় নিতে নারাজ সরকারি সংস্থাগুলো। প্রতিটি ঘটনায় এক বা একাধিক তদন্ত কমিটি হলেও দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির তেমন নজির নেই। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনও অনেক সময় আলোর মুখ দেখছে না। বিভিন্ন সময় গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটির দেওয়া সুপারিশও বাস্তবায়ন করে না কর্তৃপক্ষ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তদারককারী সংস্থাগুলোর অবহেলার কারণে অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছে পুরো ঢাকা। আগুনের  ওপর বসবাস করছেন প্রায় আড়াই কোটি মানুষ।


নগর পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক আকতার মাহমুদ বলেন, নিমতলী-চুড়িহাট্টা ট্র্যাজেডির পর বেশ কিছু সুপারিশ সরকারকে দেওয়া হয়েছিল। সরকার সেগুলো বাস্তবায়ন করেনি। তার মধ্যে প্রধান সুপারিশ ছিল– যেসব ভবনে রাসায়নিকের ব্যবসা ও গোডাউন আছে, সেগুলো স্থানান্তর করতে হবে। আর ভবন ভাড়া দেওয়ার ক্ষেত্রে মালিকদের ওপর কিছু শর্ত আরোপ করা হয়েছিল। তখন রাসায়নিক গুদাম সরানোর একটি উদ্যোগ নেওয়া হলেও বাস্তবে তার প্রতিফলন ঘটেনি। ফলে যা ঘটার তাই ঘটছে।


সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঝুঁকিমুক্ত, নিরাপদ ও বাসযোগ্য নগর নিশ্চিত করার জন্য দায়িত্বশীল সংস্থাগুলো যথাযথভাবে কাজ করছে না। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) ভবনের নকশা অনুমোদন দিয়েই খালাস। একইভাবে ওয়াসা, তিতাস, বিদ্যুৎ বিভাগও পানি, গ্যাস-বিদ্যুতের লাইন দিয়েই দায় সারছে। এগুলোর যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ ও তদারকি করছে না দায়িত্বশীল সংস্থাগুলো। দুর্ঘটনা ঘটলেও কাউকে আইনের আওতায় আনারও নজির নেই। ফলে বারবার এরকম ট্র্যাজেডি দেখতে হচ্ছে দেশবাসীকে।


রাজউকের প্রধান প্রকৌশলী উজ্জ্বল মল্লিক সমকালকে বলেন, ‘রাজউকের কাজ ভবনের নকশা অনুমোদন ও নিয়ন্ত্রণ। কেউ ভবনের নকশার ব্যত্যয় ঘটালে রাজউক দেখে। আর ভবনটি জরাজীর্ণ হলে সেটি সিটি করপোরেশনের দেখভালের কথা। বিদ্যুৎ বা গ্যাসের নিরাপত্তার বিষয়টি দেখে ফায়ার সার্ভিস ও সংশ্লিষ্ট সংস্থা। আর বিস্ফোরক-সংক্রান্ত বিষয় হলে বিস্ফোরক পরিদপ্তররের মনিটরিং করার কথা। সিদ্দিকবাজারের ভবনটির নকশাজনিত কোনো ত্রুটির কারণে বিস্ফোরণ ঘটেনি।’


ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ওই এলাকার নির্বাহী প্রকৌশলী হারুনুর রশিদ বলেন, একটি ভবনে বিদ্যুতের লাইন থাকে। গ্যাসের লাইন থাকে। প্রত্যেক ভবনেই এসির ব্যবহার আছে কমবেশি। এগুলো মনিটরিংয়ের দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের আওতায় পড়ে না। বরং কখনও এ রকম সমস্যা দেখলে আমরাই উপযাচক হয়ে তিতাস-ওয়াসা-বিদ্যুৎ বিভাগকে চিঠি লিখে জানাই। সিদ্দিকবাজারের ভবনটির সামনে একটি লেন বন্ধ রাখতে বলেছে। আমরা একটি লেন বন্ধ করে দিয়েছি।


সিদ্দিকবাজারের ভবনে বিস্ফোরণের ঘটনায় গ্যাসের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি দাবি করে তিতাসের পরিচালক (অপারেশন্স) প্রকৌশলী সেলিম মিয়া বলেন, মঙ্গলবার সংবাদ পাওয়ার পরই তিতাস তদন্ত শুরু করে। ডিটেক্টর দিয়ে পরীক্ষা করে গ্যাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। একটি রাইজার পাওয়া গেছে, সেটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। গ্যাস থেকে বিস্ফোরণ হলে সেখানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটত। সিদ্দিকবাজারের ভবনটিতে আগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেনি।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও