‘বেশি ফালাফালি করিস না, মেরে ফেলব।’
আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম ওরফে টিপু হত্যার পরিকল্পনাকারী সুমন শিকদারের জবানবন্দিতে আসা আওয়ামী লীগ ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের চার নেতার নাম মামলা থেকে বাদ দিতে চাপ দেওয়া হচ্ছে। এমনকি নিহতের স্ত্রী ফারহানা ইসলামকে প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হচ্ছে। অনবরত হুমকির মুখে সন্তানদের নিয়ে ফারহানা ইসলাম এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
ফারহানা ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, জাহিদুল খুনের পর হুমকির মুখে তিনি নিজের ও সন্তানদের নিরাপত্তার জন্য শাহজাহানপুর থানায় তিনটি ও মতিঝিল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। এ ছাড়া তিনি ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) প্রধানের কাছে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে আবেদন করেছেন। কিন্তু কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না। হুমকি পেয়েই যাচ্ছেন।
ফারহানা ইসলাম ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১, ১১ ও ১২ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর।
গত বছরের ২৪ মার্চ রাতে রাজধানীর শাহজাহানপুরে মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলামকে গুলি করে হত্যা করা হয়। সে সময় ঘটনাস্থলে রিকশায় বসে থাকা কলেজছাত্রী সামিয়া আফনান ওরফে প্রীতিও (২২) গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। ওই ঘটনায় জাহিদুল ইসলামের স্ত্রী ফারহানা ইসলাম অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে শাহাজাহানপুর থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করছে ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগ।
জাহিদুল হত্যায় মোট ২৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ও র্যাব। তাঁদের মধ্যে রাকিবুর রহমান, ইয়াসির আরাফাত, ইশতিয়াক আহম্মেদ, মশিউর রহমান ও আরিফুর রহমান (এক্সেল সোহেল) কারাগার থেকে জামিনে বেরিয়ে গেছেন। হত্যার পরিকল্পনাকারী সুমন শিকদার, ‘শুটার’ মাসুম মোহাম্মদ আকাশ ও নাসির উদ্দিন ওরফে মানিক আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। সুমনের দেওয়া জবানবন্দিতে হত্যায় ১৬ জনের নাম এসেছে। তারা আওয়ামী লীগ ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের রাজনীতিতে যুক্ত। হত্যাকাণ্ডের পর দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া সুমন শিকদারকে গত বছরের ৯ জুন ওমান থেকে ফিরিয়ে আনে পুলিশ। এরপর রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
আদালতে ১৬৪ ধারায় সুমন শিকদারের দেওয়া জবানবন্দিতে জাহিদুল হত্যায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মারুফ আহমেদ ওরফে মনসুর, মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম আশরাফ তালুকদার, শান্তিনগরের হাবিবুল্লাহ বাহার কলেজের ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সোহেল শাহরিয়ার ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ১০ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি মারুফ রেজাসহ মোট ১৬ জনের নাম আসে।