‘বড়লোকই মাংস খাওয়া কমিয়ে দিয়েছে, গরিব তো কিছুই না’
গরুর মাংসের কিনতে আসা নাসিমা আক্তার ঢাকা পোস্টকে বলেন, এত দামের মাংস কি আর নিজেরা খাওয়া যায়? বাসায় মেহমান এসেছে, তাই এক কেজি নিতে এসেছি। তিনি বলেন, আগে যেখানে প্রতি সপ্তাহেই মাংস খাওয়া হতো এখন একমাসেও নিয়মিত হয় না। আগে যখনই মাংস নিয়েছি দুই কেজি করে, এখন এক কেজিতেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়।
নাসিমা আক্তার আরও বলেন, বাজারে এখন সবকিছুরই দাম বেশি। আগে মুরগির দাম একটু কম ছিল, কিন্তু এখন দেখলাম আবারও বেড়ে গেছে। মাছের দামও বাড়তি। আমাদের দেখার আসলে কেউ নেই।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির যাঁতাকলে শুধু নাসিমা আক্তারই নয়, নিম্ন মধ্যবিত্ত প্রায় প্রতিটি পরিবারই পিষ্ট।
বাড্ডা এলাকার ডিআইটি প্রজেক্ট বাজারের গরুর মাংস বিক্রেতা নাঈম হাসান জানান তিনি গরুর মাংস বিক্রি করছেন ৭৫০ টাকা কেজি দরে। নাঈমের ভাষ্য মতে, এরপরও তিনি লাভের মুখ দেখতে পারছেন না। তিনি বলেন, আগে প্রতি সপ্তাহে দুইটা গরু জবাই করতাম, এখন একটি করছি। গরুর দাম বেড়ে যাওয়ায় আমাদের বাধ্য হয়েই মাংসের দাম বাড়াতে হয়েছে। বাজারে গরুর খাবারের দাম বেশি। সেই সাথে যুক্ত হয় পরিবহন খরচ, এটাও অন্যান্য সময়ের তুলনায় বেশি।
নাঈম হাসানের মতে সামনে যদি খাবারের দাম কমে, তাহলে গরুর মাংসের দামটা কমতে পারে। আর গরুর দাম কমলেই মাংসের দাম কমে আসবে। এছাড়া আমাদের কিছুই করার নেই।
বাড্ডা মাছবাজার সংলগ্ন গরুর মাংস বিক্রেতা মো. মনির হোসেন মাংস বিক্রি করছেন ৭২০ টাকা কেজি দরে। তিনি বলেন, আমি সব সময় অন্যদের তুলনায় কিছুটা কমে বিক্রি করার চেষ্টা করি। এখন অন্যান্য জায়গায় ৭৫০ করে বিক্রি হলেও আমার এখানে ৭২০ টাকা। এর আগে দীর্ঘদিন ৭০০ টাকায় মাংস বিক্রি করেছি, তখন অন্যরা ৭২০ টাকা করে বিক্রি করেছে। এখন দামটা অনেকটা বাধ্য হয়েই বাড়িয়েছি।
তিনি বলেন, দাম বেশি হওয়ায় গরুর মাংসের ক্রেতা অনেক কমে গেছে। তারপরও অন্যদের তুলনায় দাম কম হওয়ায় আমিই মনে হয় এই এলাকায় বেশি বিক্রি করি।