আতিকের ‘কলাগাছ অভিযান’ কি কেবলই কলা দেখানো?
ঢাকার ‘অভিজাত’ এলাকার বৃষ্টির পানি নিষ্কাশন নালায় পয়োবর্জ্য ফেলা বন্ধে ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম মাসখানেক আগে যে ‘কলাগাছ অভিযানে’ নামেন, তাতে কাজের কাজ কিছুই দেখছেন না বিশেষজ্ঞরা।
এ অভিযানে যে বাড়ি থেকে পাইপে পয়োবর্জ্য নালায় আসছে, সেই পাইপের বাইরের দিকের মুখ কলা গাছ দিয়ে আটকে দেওয়া হচ্ছে। সোমবার পর্যন্ত ৪০ দিনের অভিযানে অবৈধ পয়োসংযোগ বন্ধ করা হয়েছে মাত্র ৩৬টি বাড়ির।
কিন্তু সংযোগ বন্ধ করতে দেওয়া কলাগাছ অভিযানের পরপরই সরিয়ে ফেলা হচ্ছে। অনেক বাড়িতে পয়োবর্জ্যের একাধিক সংযোগ থাকায় একটি বন্ধ করলেও অন্যটি দিয়ে বর্জ্য যাচ্ছে নিষ্কাশন নালায়। আবার এই নালার উপর ফুটপাত নির্মাণের সময় কংক্রিটের ঢালাই দেওয়ায় অবৈধ পয়োসংযোগ বন্ধ করাও কঠিন ঠেকছে নগর সংস্থার কর্মীদের।
ডিএনসিসি জানিয়েছে, গুলশান, বনানী, বারিধারা ও নিকেতন এলাকার ৩ হাজার ৮৩০টি ভবনে চালানো জরিপে দেখা গেছে- ভবনগুলোর মাত্র ৪১টি বাড়ির পয়োবর্জ্য সঠিকভাবে নিষ্কাশন করা হচ্ছে, যা শতকরা ১ দশমিক ০৭ শতাংশ।
৫২৪টি ভবনের পয়োবর্জ্য আংশিক শোধন করা হয়। ৩ হাজার ২৬৫টি অর্থাৎ ৮৫ দশমিক ২৪ শতাংশ বাড়ির পয়োবর্জ্য ফেলা হচ্ছে পানি নিষ্কাশনের নালায়।
সেপটিক ট্যাংক বসাতে বাধ্য করতে গত ৪ জানুয়ারি অভিযান শুরু করে ডিএনসিসি। সেদিন গুলশানের দুটি বাড়ির পয়োবর্জ্যের পাইপে কলা গাছ ঢুকিয়ে সংযোগ বন্ধ করা হয়।
সেদিন আতিক বলেছিলেন, “যে কয়েকটা বাড়ির সুয়ারেজ লাইনে কলা গাছ ঢুকিয়েছি, তারা এখন পাগল হয়ে গেছে।”
এরপর এই অভিযান বারিধারা, বনানী এলাকাতেও বিস্তৃত হয়েছে। সম্প্রতি গুলশান ও বনানী এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, অভিযান শুরুর পর যেসব ভবনের পয়োসংযোগ বন্ধ করা হয়েছিল, তা আবার খুলে ফেলেছেন বাড়ির মালিকরা।
নগর পরিকল্পনাবিদ আদিল মুহাম্মদ খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কলাগাছ দিয়ে পয়োসংযোগ বন্ধ করে দেওয়া কোনো স্থায়ী সমাধান নয়। এটা হচ্ছে জাস্ট কিছু একটা করা, টেকসই কিছু না। ডিএনসিসি হয়ত অ্যাওয়ারনেস বাড়ানোর জন্যই করেছে।