এই ভালো লাগাকে ইংরেজিতে বলে ‘ক্রাশ’
আমি তখন হ্যারি পটার সিরিজের নেশায় বুঁদ। পর্দার ড্যানিয়েল র্যাডক্লিফকে ভাবি সত্যিকারের হ্যারি পটার। পত্রিকা থেকে ছবি কেটে কেটে ডায়েরিতে লাগিয়ে রাখি। র্যাডক্লিফের ঠিকানায় চিঠি পাঠানোসহ চলতে থাকে নিত্যনতুন পাগলামি।
এরপর শুরু হলো নতুন অভ্যাস! গোল গোল চশমা পরা সুদর্শন কাউকে দেখলেই তার মধ্যে হ্যারি পটারকে খুঁজতে শুরু করি। পাশের পাড়ায় এক অনুষ্ঠানে গিয়েছি, গোল গোল চশমা পরা মাইক্রোফোন হাতে উপস্থাপনা করতে দেখলাম একজনকে। ব্যাস, শুরু করে দিলাম তার ব্যাপারে খোঁজাখুঁজি। আমার ভাইয়ের কাছে জানতে পারলাম, তার নাম-ঠিকানা। শুনলাম, পড়াশোনায় ভীষণ ভালো, নামকরা কলেজে পড়ে। একবাক্যে ভালো ছেলে হিসেবে বেশ নামডাক। আগ্রহ আরও বেড়ে গেল। সেই থেকে সে আমার হ্যারি পটার। আরেকটু বড় হলে জানতে পারলাম, এই ভালো লাগাকে ইংরেজিতে ‘ক্রাশ’ বলে।
এরপর পেড়িয়ে গেছে অনেক বছর। সে তখন পুরোদস্তুর ইন্টার্ন ডাক্তার। ওদিকে আমি ভর্তি হব মেডিকেলে। অ্যাডমিশনের কিছু বিষয়ে একটু দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়ে যাওয়ায় সেদিন কী যেন মনে করে তাকেই ফোন করেছিলাম! সে খুব সুন্দর করে বুঝিয়েও বলল সব। এবার আরও এক ধাপ বেশি মুগ্ধতা।
এরপর কালেভদ্রে মেসেঞ্জারে আলাপ। শুধুই পড়াশোনার কথা। ‘ভালো করে পড়ো, ভালো রেজাল্ট করতে হবে, পোস্টগ্র্যাজুয়েশন করতে হবে, পড়তে থাকো!’ তার এই ‘পড়তে থাকো’ মন্ত্র যেন আমি সারা দিন জপতাম! এখনো মনে আছে, ফাইনাল প্রফের আগে পড়ার টেবিলের সামনের দেয়ালটাতে বড় বড় করে লিখে রেখেছিলাম, ‘পড়তে থাকো’।
পাস করলাম। একসময় আমারও মেডিকেল ছেড়ে চলে আসার সময় হয়ে গেল। মাঝেমধ্যেই আমাকে সে জিজ্ঞাসা করত, ‘ইরাবতী, তোমার বিয়ে কবে? পাত্র কি আমাদের পরিচিত?’
- ট্যাগ:
- লাইফ
- ক্রাশ
- ভালো লাগার অনুভূতি