করোনায় আক্রান্তদের ১২ শতাংশ ডিপ্রেশনে: বিএসএমএমইউর গবেষণা
কোভিড-১৯ থেকে সেরে ওঠা ব্যক্তিদের শরীরে রোগটির দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবের প্রমাণ পেয়েছেন বাংলাদেশের চিকিৎসক ও গবেষকদের একটি দল।
গবেষণায় দেখা গেছে, কোভিড-১৯ থেকে সেরে ওঠা রোগীদের মধ্যে ১২ শতাংশ মানসিক অবসাদে ভুগছেন। করোনা হলে ক্রনিক কিডনি রোগে আক্রান্তদের মৃত্যুঝুঁকি বেড়ে যায়। করোনায় যাদের ডায়াবেটিস ছিল না তাদের অনেকের ডায়াবেটিস হয়েছে। অনেকের আবার মায়োপ্যাথি (হাড়ের সঙ্গে যুক্ত পেশির রোগ) হয়েছে।
আজ সোমবার দুপুরে বিএসএমএমইউর শহীদ ডা. মিলন হলে 'মাল্টিটিউড অব ইস্যুজ ইন কোভিড: রেনাল, কার্ডিয়াক এন্ড মেটাবোলিক ইনফ্লুয়েন্স' ও 'লং টার্ম হেলথ কনসিকোয়েন্সেস অ্যাজ এ পোস্ট কোভিড-১৯ সিকোয়াল ইন হেলথ কেয়ার ওয়ার্কার্স' শীর্ষক সিম্পোজিয়ামে এসব তথ্য জানানো হয়।
বিএসএমএমইউর অর্থায়নে ২০২২ সালের জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ঢাকার বিভিন্ন স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের ৮০৪ জন চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মীর ওপর এই গবেষণা পরিচালিত হয়। সিম্পোজিয়াম আয়োজন করে কিডনি ডিজিজ রিসার্চ গ্রুপ।
গবেষণা দলের প্রধান বিএসএমএমইউর উপাচার্য অধ্যাপক মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে যারা ডিপ্রেশনে ভুগছেন চিকিৎসাসেবার মাধ্যমে তাদেরকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে হবে। করোনায় বাংলাদেশে পেশাজীবীদের মাঝে চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মীরা বেশী মারা গেছেন। কোভিড আক্রান্ত চিকিৎসকদের ৪০ ভাগ এবং নার্সদের ৩৪ ভাগ লং কোভিডে ভুগছেন।
গবেষণায় দেখা গেছে, করোনা আক্রান্ত কিডনি রোগীদের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। ডায়ালাইসিসের রোগীদের করোনা হলে মৃত্যুঝুঁকি ৫০ ভাগ। ক্রনিক কিডনি ডিজিজের রোগীদের মৃত্যু ঝুঁকি সাধারণ মানুষের চেয়ে ১০ গুণ বেশি। পেরিটোনিয়াল ডায়ালাইসিসের রোগীদের করোনা হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট রোগীদের করোনায় মৃত্যু ঝুঁকি ৫০ ভাগ। কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট রোগীদের ওপর করোনার টিকার কার্যকারিতা অনেক কম। ডায়ালাইসিস রোগীদের ক্ষেত্রে করোনার টিকা ৮৭ ভাগ কার্যকর। করোনার টিকা নেফ্রাইটিস রোগ ফিরিয়ে আনতে পারে।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে ইউজিসি অধ্যাপক ডা. সজল কৃষ্ণ ব্যানার্জী বলেন, কোভিড শেষ হয়ে যায়নি। বিশ্বের অনেক দেশেই কোভিড রয়েছে। কোভিডের সংক্রমণের জন্য সব সময় প্রস্তুত থাকতে হবে।