
জালালিয়ার শিঙাড়া: ৭৭ বছর পেরিয়ে আজও আড্ডার সঙ্গী
আবদুল হাকিমের বয়স প্রায় ৮৫। বয়সের ভারে তার সঙ্গী হয়েছে লাঠি, শরীরও ভেঙে পড়েছে অনেকখানি। কিন্তু আজও প্রায় প্রতি সন্ধ্যায় সেই এক রুটিন রয়ে গেছে। সন্ধ্যার পর তিনি আসেন জালালিয়াতে।
'এখনও নিয়মিত কেন আসেন জালালিয়াতে?' প্রশ্ন করতেই মৃদু হাসলেন আবদুল হাকিম। এরপর বেয়ারাকে ডেকে গরম শিঙাড়া দিতে বললেন। শিঙাড়ায় কামড় বসিয়েই বললেন, 'এখানে এলে আমার বয়সটা যেন কমে যায়। সেই কলেজ লাইফে চলে যাই। আমরা বন্ধু-বান্ধবরা তখন আসতাম জালাল মিয়ার টংয়ে। তখন তো টং দোকানই ছিল। নালার ওপর কাঠ দিয়ে বসানো টং দোকান। তখন শিঙাড়ার দাম ছিল ১ আনা করে। এখনো যখন এখানে আসি মনে হয় সেই বুঝি কলেজ জীবনে চলে গেলাম।'
শুধু আবদুল হাকিমই নন, সন্ধ্যা হলে জালালিয়াতে দেখা মেলে এমন অজস্র মানুষের। বেশিভাগই আসেন শিঙাড়া খেতে খেতে আড্ডা দিতে।
জালালিয়ায় শিঙাড়া খেতে এসেছিলেন ফেনী কলেজের স্নাতক শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী শরীফ। তিনি বললেন, 'অন্য কোথাও শিঙাড়া খাই না। কারণ জালালিয়ার মতো শিঙাড়া আর কোথাও নেই। শিঙাড়ার সঙ্গে যে বাহারি সস-চাটনির দরকার নেই, শুধু কাঁচা পেঁয়াজই যথেষ্ট তা জালালিয়ার শিঙাড়া খেয়েই বোঝা যায়।'
দ্বিমত করলেন না পাশে বসা শরীফের বাবা সরকারি কর্মকর্তা আহমদ আলীও। তিনি বললেন, 'জালালিয়ার শিঙাড়া আসলে এক আবেগের জায়গা। আপনি যত জায়গায়ই শিঙাড়া খান না কেন, সেই স্বাদ আর আবেগটা পাবেন না। আমার দাদা যখন সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরতেন তখন সঙ্গে নিয়ে যেতেন জালালিয়ার শিঙ্গাড়া। দাদাও নেই, বাবাও নেই। এখন আমরা বাপ-বেটাই খাই।'
- ট্যাগ:
- ব্যবসা ও অর্থনীতি
- সিঙ্গারা
- খাবার হোটেল