শীতের আগমনে শঙ্কা বাড়াচ্ছে নিউমোনিয়া
ভোরের শিশিরে পড়া সূর্যের আলো মুক্তার মতো আলো ছড়িয়ে জানান দিচ্ছে, শীত আসছে। অনেকের কাছে হিম হিম এ শীতের আমেজটা যেমন উপভোগ্য তেমনি বেশ রোমাঞ্চকরও। আবার অনেকের কাছে এটা বেদনাদায়ক। কারণ শীতের আগমন যেন ঠান্ডাজনিত রোগ-বালাই সঙ্গে নিয়েই আসে। বিশেষ করে শীতে ঝুঁকি বাড়ায় শিশুদের নিউমোনিয়া রোগ। প্রতিবারের মতো এবারও হাসপাতালগুলোতে দেখা দিচ্ছে একই চিত্র।
মরিয়ম আক্তার দুই বছরের কন্যাশিশু নিয়ে ভর্তি ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে। নিউমোনিয়া আক্রান্ত এ শিশুই তার প্রথম সন্তান। মরিয়ম আক্তার বলেন, চিকিৎসকরা বলছেন শিশুটির নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (এনআইসিইউ) প্রয়োজন। দুদিন ধরে ঢামেক হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি জন্য চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি। কোনো শয্যা খালি নেই।
মরিয়ম আক্তারের মতো এমন অনেক উদ্বিগ্ন অভিভাবক সন্তানকে এনআইসিইউতে ভর্তির আশায় আবেদন জমা দিয়েছেন। এদিকে হাসপাতাল সূত্র জানা গেছে, ঢামেক হাসপাতালের এনআইসিইউতে মাত্র ৪২টি শয্যা আছে। সবগুলোই রোগীতে পরিপূর্ণ। শিশুদের একটি ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা গেছে, ৩০ জনের ১১ জনই নিউমোনিয়া নিয়ে ভর্তি।
জানা গেছে, দেশে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু মৃত্যুর অন্যতম কারণ নিউমোনিয়া। প্রতি হাজারে ৩৬১ জন শিশু এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। আর বছরে মৃত্যু হচ্ছে ২৪ হাজার শিশুর। হাসপাতালে ৪৫ শতাংশ শিশুর মৃত্যুর কারণ নিউমোনিয়া। এ রোগে সেবাগ্রহীতার ৪২ শতাংশের রক্তে অক্সিজেনের ঘাটতি (হাইপোক্সেমিয়া) দেখা যায়। অথচ দেশের অধিকাংশ হাসপাতালে রক্তে অক্সিজেনের স্বল্পতা নির্ণয়ের ব্যবস্থা নেই। ফলে তাদের ১৩ শতাংশের মৃত্যু ঘটে প্রয়োজনের সময় অক্সিজেন স্বল্পতার কারণে, যা শঙ্কা জাগাচ্ছে আসন্ন শীতেও।