কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

ডেঙ্গু ঠেকানোর অঙ্গীকার কোথায়

দেশ রূপান্তর চিররঞ্জন সরকার প্রকাশিত: ১৩ নভেম্বর ২০২২, ১৩:২৫

করোনার মতো ডেঙ্গুও ক্রমেই ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। ইতিমধ্যে দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে প্রায় দুইশ’র কাছাকাছি পৌঁছেছে। এটি দেশের ইতিহাসে এক বছরে ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ মৃত্যুর ঘটনা। গত প্রায় এক মাস ধরে প্রতিদিন গড়ে চার থেকে পাঁচশ মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছে। তাদের অনেকেই হাসপাতালে ভর্তি হয়ে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করছে। চলতি নভেম্বরের প্রথম ৯ দিনে দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ৭ হাজার জন এবং এই সময়ে মারা গেছেন ৪৬ জন। গত অক্টোবর মাসে দেশে ২১ হাজার ৯৩২ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। মারা যান ৮৬ জন। রাজধানীতে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বেশি হলেও তা শুধু এখানেই থেমে নেই। এ বছর ৫০টি জেলায় ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগ ডেঙ্গু রোগীর যে হিসাব দিচ্ছে, বাস্তবে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা তার চেয়ে অনেক বেশি। ডেঙ্গু প্রতিরোধে সারা দেশে কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেই সরকারের।


দুই দশকের বেশি সময় ধরে ডেঙ্গু বাংলাদেশে বড় ধরনের জনস্বাস্থ্য সমস্যা হয়ে আছে। ২০০০ সালের পর থেকে প্রতি বছর বহু মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছে, মানুষ মারাও যাচ্ছে। করোনা মহামারী শুরুর বছর ২০২০ সালে ডেঙ্গুর প্রকোপ কিছুটা কম ছিল। কিন্তু গত বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ২৮ হাজার ৪২৯ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়। এর মধ্যে ১০৫ জনের মৃত্যু হয়। এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ইতিমধ্যেই ৫০ হাজার ছাড়িয়েছে। কিন্তু ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে দেশব্যাপী কার্যকর কোনো উদ্যোগ স্বাস্থ্য বিভাগের বা অন্য কোনো বিভাগের নেই। তারা রুটিন মাফিক কাজ করছেন, মর্জিমাফিক কথা বলছেন। মানুষের জীবনের মূল্য না থাকলে যা হয় আর কি! দুশ্চিন্তার বিষয় হলো, বর্ষার মৌসুম শেষ হলেও কমছে না ডেঙ্গুর প্রকোপ। গত বছর এ সময়ে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে এলেও এ বছর আসেনি; বরং মৃত্যু আতঙ্ক ছড়িয়েই যাচ্ছে। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন থেকে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হলেও ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে তারা সক্ষম হয়নি। তবে সিটি করপোরেশন বলছে, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে তারা সফল এবং যেসব রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন তাদের বেশিরভাগই করপোরেশন এলাকার বাইরে থেকে আক্রান্ত হয়ে ঢাকায় চিকিৎসা নিতে আসছেন। দেশে ডেঙ্গুর এই প্রাদুর্ভাব নতুন নয়। প্রতি বছর এই সময় সে রাজধানীসহ বিভিন্ন শহর দাপিয়ে বেড়ায়, প্রাণ কাড়ে প্রতি বছর ডেঙ্গুর খবর সংবাদপত্র জুড়ে থাকে। এবং প্রতি বছরই নিয়ম করে একই কথা ফিরে বলতে হয় : ডেঙ্গুর মোকাবিলায় সিটি করপোরেশন, পৌরসভা ও স্বাস্থ্য দপ্তর কী কী করছে, কতটা করছে, ঠিকমতো ও ঠিক সময়ে করছে কি না। বর্ষার মৌসুম শুরুর আগে থেকে প্রস্তুত হয়ে থাকা জলাশয় ও যে-যে জায়গায় জল জমতে পারে, পূর্বানুমানে সেগুলো পরিষ্কার করার বন্দোবস্ত করা, জনবসতি জঞ্জালমুক্ত রাখা ও সর্বোপরি ডেঙ্গু, তার উপসর্গ ও চিকিৎসা নিয়ে তৃণমূল স্তরে গিয়ে প্রচার অভিযানÑ এগুলো উপেক্ষিতই থাকছে। প্রতি বছর একই অভিযোগ, একই অবহেলা, এ-ই কি তবে ভবিতব্য?


আমাদের দেশে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ বাস্তবায়ন করা হয় না। এমনকি রুটিন কাজটাও ঠিকঠাক মতো করা হয় না। নগরীতে কিছু কিছু এলাকায় মাঝে মাঝে মশক নিধন ওষুধ ছিটানো হয়, মেয়র সাহেবরা হঠাৎ হঠাৎ দুচার জায়গা পরিভ্রমণ করে এক-দুজনকে জরিমানা করেন, হম্বিতম্বি করেন। এর বাইরে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে তেমন কোনো কার্যকর উদ্যোগ কখনো দেখা যায় না। তবে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সবই সিটি করপোরেশন ও সরকারেরই দায়, এই মনোভাবও ক্ষতিকর। সচেতন হতে হবে নাগরিককেও। জ্বর মানেই তা ভাইরাল, এই মৌসুমে একটু-আধটু হয় বলে অবহেলাও নাগরিক অসচেতনতা, বাড়ির পাশে খোলা জায়গা নর্দমা বা বাগানে নিজেরাই জঞ্জাল ফেলা, ফুলের টব বা ডাবের খোলায় জল জমতে দেওয়াও নাগরিক কাণ্ডজ্ঞানের পরিচয় নয়। সরকারের ব্যবস্থাপনায় গলদ আছে ঠিক কথা, কিন্তু নাগরিক জীবনযাত্রায় ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অনেক কিছুই কর্র্তৃপক্ষের সার্বিক নজরদারি এড়িয়ে যেতে পারে। যে কোনো মৃত্যুই বড় বেদনার, বিশেষ করে ডেঙ্গুতে শিশু, তরুণদের মৃত্যু। অথচ, আমরা যেন ধরেই নিয়েছি যে, প্রতি বছর বর্ষাকালে ও বর্ষার আগে-পরে কিছু প্রাণ অকালে ঝরে যাবে। তাই শহরের অজস্র জায়গাকে আমরা মশক বাহিনীর জন্য ‘অভয়ারণ্য’ হিসেবে গড়ে তুলেছি। রাজপথে খানাখন্দ, যত্রতত্র না-বোজানো গর্ত, তা নিয়ে কারও কোনো মাথাব্যথা নেই। রাস্তার গর্তে বৃষ্টির জল জমে, জমা জলে দ্রুতলয়ে ডিম পাড়ে মশক বাহিনী। মশার ডিম থেকে বাচ্চা ফুটে ভোর আর সন্ধ্যায় পায়ে হুল ফুটিয়ে যায়। একজন থেকে দশ জনের শরীরে ভাইরাস ছড়ালে রোগ ছড়ানোর দায়টা কার পথের, মশার, সিটি করপোরশেন, নাগরিকদের, না সরকারের?

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও