বৈশ্বিক সম্পদের সংকট মোকাবেলায় উন্নত দেশগুলো কী ভাবছে
চীনের ওপর পশ্চিমা দেশগুলোর খনিজ সম্পদের নির্ভরতাসংক্রান্ত বিষয়টি নিয়ে এতদিন খুব কমসংখ্যক বিশেষজ্ঞ ও নীতিনির্ধারকই চিন্তিত ছিলেন। বর্তমানে এ চিন্তার পরিসর ব্যাপ্ত হয়ে সবার সামনে এসে দুশ্চিন্তায় রূপ নিয়েছে। শীর্ষস্থানীয় পত্রিকায় এ নিয়ে লেখালেখি হচ্ছে, খবরের মূল শিরোনাম হয়ে বিবিসির ডকুমেন্টারি সিরিজের বিষয়বস্তু হয়ে উঠেছে। কিন্তু এক্ষেত্রে আমাদের করণীয় কী? আমরা এখনো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এ প্রশ্নের যথাযথ উত্তর খুঁজে পাইনি।
নিকট ভবিষ্যতে যে সমূহ বিপদ অপেক্ষা করছে তা অস্বীকার করার উপায় নেই। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহের জন্য শত্রু কিংবা বিরোধপূর্ণ রাষ্ট্রের ওপর নির্ভর করা যে বুদ্ধিমানের কাজ নয়, কয়েক মাস ধরে ইউরোপীয় দেশগুলো সে শিক্ষা বেশ ভালোভাবেই পেয়েছে। তাহলে সমাধান কী? এদিকে জ্বালানি সংকটের সমাধান হিসেবে নবায়নযোগ্য শক্তি সরবরাহ বৃদ্ধির চেষ্টা বর্তমান পরিস্থিতিকে আরো চোখরাঙানি দিচ্ছে। কেননা নবায়নযোগ্য শক্তি উৎপাদন ও সরবরাহ করতে কোবাল্ট, নিকেল, গ্রাফাইট, লিথিয়াম ও তামার মতো খনিজের ওপর নির্ভরতা বাড়ায়।
বৈদ্যুতিক ব্যাটারি থেকে বাষ্পচালিত ইঞ্জিন কিংবা বিদ্যুতের গ্রিড বৃদ্ধি, সব ধরনের কাজেই এ খনিজগুলো পরিবেশবান্ধব জ্বালানি সরবরাহ বৃদ্ধির জন্য অপরিহার্য। বিশ্বব্যাংক ভাবছে, বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা করতে ২০৫০ সালের মধ্যে তাদের উৎপাদন প্রায় ৫০০ শতাংশ বাড়াতে হবে।
একদিকে রাশিয়া যেমন জীবাশ্ম জ্বালানির একটি প্রধান উৎস হয়ে উঠেছে, অন্যদিকে চীনও এ মূল্যবান খনিজ সম্পদ প্রক্রিয়াকরণে নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করে চলছে। বর্তমানে বিশ্বের লিথিয়াম, নিকেল ও কোবাল্টের প্রায় ৬০-৭০ শতাংশ পরিশোধন করে চীন। এছাড়া তারা কঙ্গোয় কোবাল্ট ও ইন্দোনেশিয়ায় নিকেল উত্তোলনে বড় ধরনের বিনিয়োগ করেছে। এ বিনিয়োগের অর্থ হলো খনিগুলো থেকে আহরিত সম্পদের ক্রমবর্ধমান অংশের নিয়ন্ত্রণ করবে চীন।