সীমান্তের চোরাচালান রুট স্বর্ণের খনি
দেশের সীমান্তবর্তী ১২ জেলার অর্ধশতাধিক চোরাচালান রুট যেন সোনার খনিতে পরিণত হয়েছে। এসব স্থানের কোথাও না কোথাও প্রতিদিন উদ্ধার হচ্ছে স্বর্ণ। গত দুই মাসে রুটগুলো থেকে অর্ধশত কোটি টাকার স্বর্ণ উদ্ধার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। পাশপাশি গ্রেফতার করা হয়েছে বাহকদের। গ্রেফতার ব্যক্তিদের দাবি, স্বর্ণগুলো বিভিন্ন বিমানবন্দর হয়ে দেশে আসে। এরপর ভারতে পাচারের উদ্দেশে নেওয়া হয়। এমন পরিস্থিতিতে বিমানবন্দরে নিয়োজিত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কর্মতৎপরতা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, স্বর্ণ পাচারের সীমান্তঘেঁষা রুটগুলোর মধ্যে চুয়াডাঙ্গায় রয়েছে তিনটি। এগুলো হলো-কার্পাসডাঙ্গা, দর্শনা ও জীবননগর। সাতক্ষীরা লাগোয়া পশ্চিমবঙ্গের সীমান্তবর্তী ৬টি-ভাদিয়ালী, কালীগঞ্জ, শেরপুর, ভোমরা, নোংলা ও কৈখালী। যশোরের পাঁচটি পয়েন্ট দিয়ে স্বর্ণ পাচার করা হয়। এ ছাড়া রাজশাহীর সোনাইকান্দি, হরিপুর, কাশিডাঙ্গা, আলাইপুর, বাগা, মুক্তারপুর ও চড়ঘাট; চাঁপাইনবাবগঞ্জের কিরণগঞ্জ, ভোলাহাট ও দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট, ফুলবাড়ী, হিলি, কামালপুর ও বিরল; কুড়িগ্রামের রৌমারী ও ফুলবাড়ী এবং লালমনিরহাটের বুড়িরহাট, শ্রীরামপুর ও দহগ্রাম সীমান্ত দিয়ে ভারতে স্বর্ণ পাচার হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সীমান্ত এলাকা দিয়ে স্বর্ণ পাচারে কৃষক, দিনমজুর, ট্রাক-লরির চালক, খালাসি, রাখাল ও জেলেদের ব্যবহার করা হচ্ছে। টিফিন বক্স, মৌসুমি ফলের ঝুড়ি, সবজি ও শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে রেখে স্বর্ণ পাচার করা হচ্ছে। স্বর্ণ চোরাকারবারিরা পাচারের সময় বাংলাদেশ ও ভারতের মোবাইল সিম ব্যবহার করে। কথাবার্তা চলে এসএমএসের মাধ্যমে। আকাশপথে স্বর্ণ আসার পর বাস ও ট্রেনে সীমান্তের জেলাগুলোতে পৌঁছে যায়।
এ বিষয়ে বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা শরীফুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, আমরা কেবল পাচারের সময় স্বর্ণ আটক করি। পাশাপাশি পাচারকারীদের গ্রেফতার করি। আমরা মামলার তদন্ত করি না। প্রাথমিকভাবে যেসব তথ্য পাই তা সঙ্গে সঙ্গেই প্রেস রিলিজ দিয়ে জানিয়ে দিই। এরপর আর বেশিকিছু জানার সুযোগ থাকে না। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দুই দেশের সীমান্তরক্ষীরা স্বর্ণ পাচারের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে নজরদারি করছে। যেসব পয়েন্ট দিয়ে স্বর্ণ পাচার হচ্ছে সেখানে নজরদারি ও টহল বাড়ানো হয়েছে বলে তিনি জানান।