সিসিটিভি ক্যামেরাযুক্ত বাসে চড়ার অভিজ্ঞতা
ঢাকা শহরের ১০৮টি বাসে লাগানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা। নিয়মিত যাঁরা গণপরিবহনে চলাফেরা করেন, বিশেষ করে নারীরা, তাঁদের জন্য এটা একটা স্বস্তির খবর। বাসে নানা ধরনের হয়রানির শিকার হয় মেয়েরা। এই যেমন কোনো নারী যাত্রী যখন সিটে বসেন, পাশে বসা বা সামনে দাঁড়িয়ে থাকা কিছু পুরুষ যাত্রীর আচরণ হয় অশোভন। নারী যাত্রীর গায়ের ওপর ইচ্ছাকৃতভাবে বারবার হেলে পড়তে থাকেন কিছু পুরুষ যাত্রী। প্রতিবাদ করতে গেলেই শোনা যায়, বাসে উঠেছেন, ধাক্কা তো লাগবেই। শুধু তাই নয়, বেশির ভাগ সময়ই মহিলা সিটে পুরুষদের বসতে দেখা যায়। যদি কোনো নারী প্রতিবাদ করেন, দেখা যায় অনেক পুরুষ যাত্রী একত্র হয়ে সেই নারীকে বিদ্রূপ করছেন। বাসের চালক ও চালকের সহকারী থাকেন নিশ্চুপ। এ ধরনের পরিস্থিতিতে কখনো যদি তাঁরা কথাও বলেন, সেটা হলো ‘এই জন্যই তো মাইয়া মানুষ ওঠাই না। উইঠাই শুধু ক্যাচাল করে।’
মাস ছয়েক আগের কথা। বাসে করে শেওড়াপাড়া থেকে কারওয়ান বাজার আসছি। চালক অল্প বয়সী। এমন বেপরোয়াভাবে পুরো রাস্তায় বাস টানছিল যে বারবার কড়া ব্রেক করতে হচ্ছিল। কখনো ওভারটেক করতে গিয়ে লাগিয়ে দিচ্ছে আরেক বাসের সঙ্গে। ভীতসন্ত্রস্ত যাত্রীরা হালকা প্রতিবাদ করলেও কোনো পাত্তাই দিচ্ছিল না চালক। এ অবস্থা দেখে মহিলা সিটে বসা আমি সেদিন বেশ জোরেশোরেই প্রতিবাদ করেছিলাম। বাসের চালক ও তার সহকারী পাল্টা তর্ক জুড়ে দেয়, মহিলা হয়ে কেন এত কিছু বলছি। কারওয়ান বাজার বাসস্টপেজে নামার সময় এমন জোরে বাস টান দেয় যে আরেকটু হলে আমিই হয়তো বাসের চাকার নিচে চলে যেতাম। তাই শুধু যৌন হয়রানি নয়, বাসে এমন নানা ধরনের বিচিত্র অভিজ্ঞতা সম্মুখীন হন নারীরা।
১৬ অক্টোবর পাইলট প্রকল্প হিসেবে রাজধানীর যে ১০৮টি বাসে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে, তার মধ্যে প্রজাপতি কোম্পানির পরিবহনও আছে। এই বাসের যাত্রাপথ আবদুল্লাহপুর-ঘাটারচর-আবদুল্লাহপুর। ২৩ অক্টোবর মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বর থেকে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো প্রজাপতি পরিবহনের তেমনই একটি বাসে উঠি। উদ্দেশ্য নতুন এ উদ্যোগ নিয়ে নিয়মিত গণপরিবহনে যাতায়াত করা নারীরা কী ভাবছেন বা কতটুকু নিরাপত্তাবোধ করছেন, সেটা সরেজমিনে দেখা। টিকিট লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা নারী যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে বুঝতে পারলাম, সিসিটিভি ক্যামেরার বিষয়টি সম্বন্ধে খুব একটা অবগত নন তাঁরা।
- ট্যাগ:
- লাইফ
- সিসি ক্যামেরা
- গণপরিবহন