গণতন্ত্র বনাম উন্নয়নের সিঙ্গাপুর মডেল
গণতন্ত্র নিয়ে আমাদের দেশে এক ধরনের আদিখ্যেতা আছে। আমরা কথায় কথায় গণতন্ত্রের কথা বলি বটে তবে গণতান্ত্রিক রীতিনীতির প্রতি আমাদের শ্রদ্ধাবোধ কতটুকু সে প্রশ্ন করাই যায়। আমাদের কাছে গণতন্ত্র হলো পাঁচ বছর পর ভোট দিতে পারা। ভোট দিয়ে কাউকে জিতিয়ে বা কাউকে হারিয়ে দিতে পারলেই আমরা খুশি। যাদের আমরা ভোট দিয়ে নির্বাচিত করি তারা আচার-আচরণে কতটুকু গণতান্ত্রিক তা আর আমাদের দেখার বিষয় নয়।
আমাদের দেশের বড় দুটি রাজনৈতিক দলের দিকে দেখুন। দল পরিচালনায় গণতন্ত্রের তেমন চর্চা আছে কি? দলের সম্মেলন নিয়মিত হয় না। নির্ধারিত সময়ের পরে যদিওবা সম্মেলন হয় ,কিন্তু কমিটি গঠন হয় না। সম্মেলনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বা চেয়ারপারসন ও মহাসচিব নির্বাচন পুরো কমিটি গঠনের জন্য অপেক্ষায় থাকতে হয় দিনের পর দিন। সম্মেলনে কাউন্সিলরদের মতামতের ভিত্তিতে কমিটি গঠন করা হয় না কেন? দলীয় সভাগুলোতে দলপ্রধানের ইচ্ছার বাইরে কখনো কোনো সিদ্ধান্ত কি গ্রহণ করা হয়?
আলোচনা হলো, বিভিন্ন জন ভিন্ন ভিন্ন মত দিলেন এবং তারপর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হলো দলীয় প্রধানের ওপর। এটা কেমন গণতন্ত্র? আওয়ামী লীগকে গণতন্ত্র হত্যার দায়ে অভিযুক্ত করার ক্ষেত্রে বিএনপি ক্লান্তিহীন। বিএনপি কবে, কীভাবে গণতন্ত্রকে উজ্জীবিত করেছে, সে প্রশ্ন করা যাবে না। মোটা দাগে আমাদের বড় রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে গণতন্ত্র মানে একে অপরের লাগামহীন বিরোধিতা করা। বিএনপির গণতন্ত্র বলতে বোঝে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে টেনে নামানো। আর আওয়ামী লীগের গণতন্ত্র হলো বিএনপিকে প্রতিরোধ করা।