‘প্রথম দেখায় তাঁর প্রেমে পড়েছিলাম’
ভূমধ্যসাগরের দুর্গম পথে ছোট্ট ডিঙা ভাসিয়ে উন্নত জীবনের আশায় অনেকেই ইউরোপে ঢোকার চেষ্টা করেন। কেউ কেউ এভাবে ইউরোপে ঢুকতে পারেন। কাউকে ফিরে আসতে হয় বা আটক হয়ে অবর্ণনীয় কষ্টের ভেতর দিন পার করতে হয়। আবার কেউ হয়তো সমুদ্রের জল আর পেরোতে পারেন না। খাবারের অভাবে কিংবা পানিতে ডুবে মৃত্যু হয় অনেকের। অনেক বাংলাদেশিও স্বজন ছেড়ে এই পথে ইউরোপে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তেমনি পশ্চিম আফ্রিকার দেশ বেনিন থেকে লিবিয়া হয়ে সমুদ্রপথে ইউরোপে যাওয়ার কয়েকবার চেষ্টা করেছেন ২৫ বছর বয়সী সাদিয়া। অর্থের অভাবে স্বামীকে ছেড়ে তিন ছোট সন্তানকে নিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দুর্গম পথ পাড়ি দিয়েছিলেন তিনি। তিনবার মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছেন। শেষমেশ ইতালির সিসিলি দ্বীপে নামতে পেরেছেন।
কিন্তু যাঁকে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন, সেই স্বামীর জন্য এখন মন পোড়ে সাদিয়ার। যে স্বামী চাইলেই তাঁকে ছেড়ে চলে যেতে পারতেন, কিন্তু যাননি—সেই স্বামীর জন্য এখন তাঁর বুকের ভেতর গুমড়ে ওঠে। এমন প্রেম, ভালোবাসা ও দৃঢ় সংকল্প নিয়ে সাদিয়া এবং তাঁর সন্তানদের সমুদ্রপথে ঝুঁকিপূর্ণ ইউরোপ যাত্রার গল্প আল-জাজিরায় প্রকাশিত হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেনিন থেকে ইউরোপে ডিঙিতে যাত্রা করেছিলেন ২৫ বছর বয়সী সাদিয়া। উদ্দেশ্য, পরিবারসহ ইউরোপে অভিবাসী হওয়া। সে উদ্দেশ্য সফল হলেও পুরো পরিবার নিয়ে যেতে পারেননি তিনি। যেতে চেয়েও কেবল অর্থ ও দালালের কারণে স্বামীকে লিবিয়ায় রেখেই যেতে হয়েছে তাঁকে।
২০২২ সালের এপ্রিলে ইউরোপে ঢোকার উদ্দেশ্যে লিবিয়ার সৈকত থেকে একটি ছোট্ট ডিঙিতে চেপে বসেন সাদিয়া। সেদিন চারদিকে ছিল ঘুটঘুটে অন্ধকার। সঙ্গে তাঁর ছোট তিন সন্তান। সন্তানদের নিয়ে ডিঙির একদম কোনায় বসেছিলেন তিনি। চারপাশে গাদাগাদি করে বসেছিলেন। আর পুরুষেরা সমুদ্রের দিকে মুখ করে পানিতে পা ঝুলিয়ে বসেছিলেন।