রপ্তানি বাণিজ্যে গুরুত্ব পাচ্ছে সুশাসন ও মানবাধিকার
রপ্তানি বাণিজ্যের ক্ষেত্রে মৌলিক মানবাধিকার, সুশাসন ও শ্রম অধিকার ইস্যু আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। বাণিজ্য অগ্রাধিকার বিশেষত শুল্কমুক্ত রপ্তানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সামনে এসব বিষয় বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে আসছে। প্রধান বাজার ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন নীতিতে আমদানির উৎস দেশে এ বিষয়গুলো পরিপালনের ওপর বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে। এসব দেশের ভোক্তাদের বিভিন্ন সংগঠন এবং ঢাকায় দায়িত্বরত কূটনীতিকরা প্রায়ই মানবাধিকার ও সুশাসন নিয়ে কথা বলছেন। ব্র্র্যান্ড এবং ক্রেতারাও এ বিষয়ে সরব।
এদিকে বাংলাদেশ এখন স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) শ্রেণি থেকে উন্নয়নশীল স্তরে উত্তরণের পর্যায়ে রয়েছে। পোশাক রপ্তানিতে প্রতিযোগী বিভিন্ন দেশ প্রধান বাজারকেন্দ্রিক দেশ ও অঞ্চলের সঙ্গে মুক্তবাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) করছে। ভিয়েতনাম ইইউর সঙ্গে এফটিএ করেছে, যার মাধ্যমে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে পূর্ণ শুল্ক্কমুক্ত সুবিধা পাবে দেশটি। যুক্তরাজ্যের সঙ্গে ভারতের এফটিএ চূড়ান্ত পর্যায়ে। বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের প্রধান উৎস রপ্তানি খাত এখানেও একটি চ্যালেঞ্জের মুখে।
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সানেমের নির্বাহী পরিচালক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক সেলিম রায়হান সমকালকে বলেন, সুশাসন, মানবাধিকার, বাকস্বাধীনতাসহ বিভিন্ন প্রশ্নে জিএসপি সুবিধা স্থগিত বা বাতিল হতে পারে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, রানা প্লাজা ধসের পর যুক্তরাষ্ট্র জিএসপি স্থগিত করে। শ্রীলঙ্কার গৃহযুদ্ধের সময়েও দেশটির জিএসপি বাতিল করা হয়। ফলে মৌলিক মানবাধিকারের বিষয়গুলোতে সরকারকে গুরুত্বের সঙ্গে নিতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। একই সঙ্গে ভূরাজনৈতিক কৌশলও এর সঙ্গে জড়িত। এসব বিবেচনায় ইউরোপ ও আমেরিকার সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে সরকারকে সতর্ক নজর রাখতে হবে।
সম্প্রতি বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সিপিডির এক সংলাপে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. রেহমান সোবহান মানবাধিকার এবং শ্রম অধিকার বিষয়ে কথা বলেছেন। তিনি বলেন, এলডিসি থেকে উত্তরণের বর্তমান পর্যায়ে কমপ্লায়েন্স (যথার্থ মান পরিপালনে সম্মতি) প্রশ্নে আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ছে। ইইউর নতুন জিএসপি পর্যালোচনা এবং যুক্তরাষ্ট্রে স্থগিত জিএসপি ফেরত পাওয়া বিষয়ে আন্তর্জাতিক মানের শ্রম অধিকার নিশ্চিত করাসহ অন্যান্য শর্ত পরিপালন করতে হবে। সরকারের দায়িত্বই এখানে মুখ্য।