১৪০০ টাকা লুট করতে ৩ খুন! ১৫ বছর পর ধরা আসামি
২০০৭ সালের ৬ জানুয়ারি রাতে বাড়ি ফিরছিলেন কুমিল্লার তিন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। পথে জেলার লাকসামে ডাকাত দলের কবলে পড়েন তারা। পরে ডাকাতরা তিনজনের কাছে এক হাজার ৪০০ টাকা পেয়ে লুটে নেয়। ওই তিন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর একজন চিনতে পারেন ডাকাত দলের এক সদস্যকে, এ ঘটনার এক পর্যায়ে ডাকাত সদস্যরা নির্মমভাবে গলাকেটে হত্যা করেন ওই তিন ব্যবসায়ীকে।
লাকসামের চাঞ্চল্যকর ওই তিন হত্যাকাণ্ডের অন্যতম হোতা ডাকাত সদস্য নেওয়াজ শরীফ রাসেল ওরফে সবুজকে দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছর পর গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। র্যাবের ভাষ্য, এই দীর্ঘ সময় ছদ্মনাম নাম ও পরিচয়ে ঢাকার সাভার, কমলাপুর ও সর্বশেষ কুমিল্লার বরুড়ায় আত্মগোপনে ছিলেন রাসেল। এরই মধ্যে আদালতের রায়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ পেয়েছেন রাসেল। তিনি লাকসাম উপজেলার মুদাফ্ফরগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়নের শ্রীয়াং গ্রামের সেলিম মিয়ার ছেলে।
সোমবার (২৯ আগস্ট) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আলোচিত ওই তিন খুনের বিস্তারিত জানিয়েছেন র্যাব-১১, সিপিসি-২ কুমিল্লার কম্পানি অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন। এর আগে রবিবার দিবাগত গভীর রাতে জেলার সদর উপজেলার আলেখারচর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন জানান, মৃত্যদণ্ডপ্রাপ্ত রাসেল একজন পেশাদার ডাকাত সদস্য ছিলেন। এর আড়ালে বাসের হেলপারিও করেছিলেন। ২০০৭ সালের ৬ জানুয়ারি রাতে রাসেলসহ তার কয়েকজন সহযোগী ডাকাতি উদ্দেশ্যে জেলার লাকসাম উপজেলার শ্রীয়াং এলাকার বদির পুকুর পাড় সংলগ্ন একটি জঙ্গলে লুকিয়ে ছিলেন। ওইদিন রাতে স্থানীয় শ্রীয়াং বাজারের কাচাঁমাল ব্যবসায়ী পাশের মনোহরগঞ্জ উপজেলার প্রতাপপুর গ্রামের মনিন্দ দেবনাথের ছেলে উত্তম দেবনাথ ও পরীক্ষিত দেবনাথ এবং পান ব্যবসায়ী লাকসাম উপজেলার জগৎপুর গ্রামের সামছুল হকের ছেলে বাচ্চু মিয়া রাতে বাড়ি ফিরছিলেন। পথিমধ্যে তাদের পেয়ে রাসেল ও তার সহযোগীরা ঘিরে ফেলে মারধর করে এক হাজার ৪০০ টাকা লুটে নেয়। হামলার এক পর্যায়ে হঠাৎ ব্যবসায়ী উত্তম দেবনাথ আসামি রাসেল ও তার সহযোগীদের চিনতে পেরেছে এবং পরের দিন বিষয়টি স্থানীয় মেম্বার ও চেয়ারম্যানের নিকট নালিশ করবে মর্মে হুমকি দেয়। এতে রাসেল ও তার সহযোগীরা ৩ ব্যবসায়ীকে হত্যা করার সিদ্ধান্ত নেয়। পরে তাদের পার্শবর্তী একটি মাঠে নিয়ে চাপাতি ও ছোরা দিয়ে গলাকেটে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহত বাচ্চু মিয়ার ভাই কবির হোসেন পরদিন বাদী হয়ে লাকসাম থানায় ডাকাতিসহ হত্যা মামলা দায়ের করেন। তদন্ত শেষে পুলিশ আদালতে মামলার চার্জশিট দেওয়ার পর শুনানি শেষে ২০১৮ সালের ১৪ নভেম্বর কুমিল্লার তৎকালীন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ চতুর্থ আদালতের বিচারক নুর নাহার বেগম শিউলী ওই মামলার রায় প্রদান করেন। এতে অভিযুক্ত ৫ জন আসামির বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায় প্রদান করেন তিনি।