খেয়ে না খেয়ে দিন কাটছে চা শ্রমিকদের
মৌলভীবাজারের ৯২টিসহ সারা দেশের ১৬৭ চা বাগানের শ্রমিকরা দৈনিক তিনশ টাকা মজুরি দাবিতে ১৮ দিন ধরে কর্মবিরতিসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছেন। ফলে তারা সাপ্তাহিক মজুরি ও রেশন থেকে পাচ্ছেন না। চা জনগোষ্ঠীর বেশিরভাগ পরিবারের খেয়ে না খেয়ে তাদের দিন চলছে।
এ দিকে ক্ষুদ্র ঋণ প্রদানকারী এনজিও সংস্থা ঋণগ্রহীতাদের কিস্তি দেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করছে বলে জানা গেছে। চা শ্রমিকদের করুণ অবস্থার মাঝে সংশ্লিষ্ট ক্ষুদ্র ঋণ প্রদানকারী কর্তৃপক্ষকে চাপ না দেওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ চা শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।
চা শ্রমিক ফেডারেশনের পাঠানো প্রেসবিজ্ঞপ্তি সূত্রে জানা যায়, চা শ্রমিক ইউনিয়ন নেতাদের নেতৃত্বে ৯ আগস্ট থেকে কর্মবিরতিসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছেন চা শ্রমিকরা। ফলে বাগানে কাজ না করায় মজুরি এবং রেশন পাচ্ছেন না তারা। এ দিকে বাগানে অচলাবস্থা চলায় ক্ষুদ্র ঋণগ্রহীতা শ্রমিকরা পরিবার-পরিজন নিয়ে দু’বেলা খাবার জোগাতে হিমশম খাচ্ছেন সেখানে সাপ্তাহিক কিস্তির দেওয়ার কথা ভাবতেই পারছেন না।
মৌলভীবাজারের ৯২টি চা বাগানকেন্দ্রিক আশা, টিএমএসএস, গ্রাম উন্নয়ন, সঞ্চয়নসহ বিভিন্ন এনজিও সংস্থা শ্রমিকদের মাঝে ক্ষুদ্র ঋণ প্রদান করে থাকে। এসব প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ চা শ্রমিকদের সাম্প্রতিক কঠিন দুঃসময়ে মধ্যে সাপ্তাহিক কিস্তির টাকা উত্তোলনে চাপ দিচ্ছে। ঋণগ্রহীতারা বলছেন চা বাগানের পরিবেশ স্বাভাবিক হলে তখন বকেয়া সমন্বয় করে দেওয়া হবে তা মানছেন মুনাফাভোগী প্রতিষ্ঠানগুলোর ফিল্ড অফিসাররা।
এ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ফেডারেশন কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি বিপ্লব মাদ্রাজি পাশী এবং সম্পাদক দীপংকর ঘোষ এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেন, চা জনগোষ্ঠী তাদের যৌক্তিক দাবিতে একযোগে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় তারা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে এক ধরনের কর্মহীন। তাই মানবিক বিবেচনায় আপাতত সাপ্তাহিক কিস্তির উত্তোলনে চাপ না দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানান ঋণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষকে।
টিএমএসএস মুন্সিবাজার শাখা ম্যানেজার মোবাশ্বির হানিফিল্লাহ রানা জানান, চা বাগানের অচলাবস্থার মাঝে কিস্তি পরিশোধের জন্য কাউকে চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে না। ফিল্ড অফিসার রুটিনওয়ার্ক অনুযায়ী ঋণগ্রহীতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে থাকে। যারা কিস্তি দিতে পারে তাদের টাকা গ্রহণ করা হয়। যারা অক্ষম তাদেরকে চাপ দেওয়া হচ্ছে না।