সাংগঠনিক সভা, সভাপতির নির্দেশনা ও মাঠের চিত্র
১৪ আগস্ট আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকদের একটি বৈঠক দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গণভবনে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সমস্যা সম্পর্কে শেখ হাসিনা উপস্থিত সাংগঠনিক সম্পাদকদের অবহিত করেন। বিশ্ব পরিস্থিতি যথেষ্ট প্রতিকূলে থাকা সত্ত্বেও শেখ হাসিনা যথাসময়ে তেলের দাম কমিয়ে সহনশীল অবস্থায় নিয়ে আসার কথা তাঁদের জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি বিরোধী দলের আন্দোলনের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য সম্পর্কেও তাঁর অবস্থান ব্যাখ্যা করেন। তিনি স্পষ্ট ভাষায় উল্লেখ করেছেন, বিরোধী দলের আন্দোলনে তিনি কিংবা সরকার ভীত নয়। তাদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার অবস্থানেও তিনি নেই—এ কথাও জানিয়ে দেন। তিনি দৃঢ়ভাবে আশা করেন যে আগামী সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ দেশে বিদ্যুৎ সমস্যার অনেকটাই সমাধান দেখা যাবে। বিশেষজ্ঞদেরও ধারণা, বৈশ্বিক জ্বালানি-সংকট সমাধানে শেখ হাসিনার সরকার যেসব উদ্যোগ নিচ্ছে, তার ফলে অক্টোবরের দিকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসতে পারে।
সেটি হলে দেশের অর্থনীতির গতি বৃদ্ধি পাবে। জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয় করা হলে পরিবহন, শিল্প-কলকারখানা, ব্যবসা-বাণিজ্যের খরচও কমে আসবে। সাধারণ মানুষের ওপর অর্থনৈতিক চাপ কমবে। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য ও পরিকল্পনা সম্পর্কে বিশেষজ্ঞ ও রাজনীতি সচেতন মহল দীর্ঘদিন থেকে আস্থাশীল—এতে কোনো সন্দেহ নেই। তবে আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গসংগঠনগুলোর তৃণমূল থেকে ওপরের দিকে দলীয় সভাপতির আদেশ, নির্দেশ ও চাওয়া-পাওয়ার যথেষ্ট ব্যত্যয় অনেক ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, যা যথেষ্ট হতাশার জন্ম দেয়। বিষয়টি সম্পর্কে শেখ হাসিনাও অবহিত বলেই মনে করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। সভায় আসন্ন জাতীয় সম্মেলন ও নির্বাচন উপলক্ষে সাংগঠনিক সম্পাদকদের করণীয় নির্দেশনা দেওয়ার মধ্যে তাঁর সেই আন্তরিকতার স্পষ্ট প্রকাশ পাওয়া যায়।
শোক দিবস পালনের এক দিন আগে সাংগঠনিক সম্পাদকদের নিয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে দলীয় প্রধানের সামনে বিভিন্ন বিভাগের সাংগঠনিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়। একই সঙ্গে তাঁদের বক্তব্য শুনে তিনি তাৎক্ষণিক করণীয় সম্পর্কেও নির্দেশনা দেন। তিনি যেসব বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন তা হচ্ছে: ১. আগামী ডিসেম্বরে দলের ২৩তম জাতীয় কাউন্সিলের আগেই মেয়াদোত্তীর্ণ সব কমিটি ভেঙে নতুন কমিটি গঠন এবং দুঃসময়ের পরীক্ষিত নেতা-কর্মীদের খুঁজে বের করে দলে ভেড়ানো, ২. দলে গ্রুপিং না করারও কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছে, ৩. সংসদ সদস্য ও নেতারা যাতে দলের ভেতরে পৃথক বলয় সৃষ্টি করতে না পারেন, সে জন্য তাঁদের সক্রিয় থাকা, ৪. সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড দেশবাসীর সামনে বেশি বেশি করে তুলে ধরা।