কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

পুলিশ ও লাঠিয়ালে ফারাক করার উপায় কী

প্রথম আলো কামাল আহমেদ প্রকাশিত: ১১ আগস্ট ২০২২, ১৪:৫৯

সোমবারের দৈনিক পত্রিকাগুলোর প্রথম পাতায় ছাপা হওয়া একটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে, পুলিশ ও কয়েকজন লাঠিয়াল কয়েকজন তরুণ-তরুণীকে বেধড়ক পেটাচ্ছে। অনেকে এ ধরনের মারকে গরু পেটানোও বলে থাকেন। বর্তমান বিশ্বে অবশ্য প্রাণী অধিকারবাদীদের কারণে অধিকাংশ সভ্য দেশেই কোনো জীবের প্রতি এ ধরনের নিষ্ঠুরতা ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে, অপরাধীর কপালে জেল-জরিমানা নিশ্চিত।


বিক্ষোভকারীদের বেধড়ক পিটুনির ঘটনা এটিই প্রথম নয়। এর আগেও বহুবার হয়েছে এবং অনেকের কাছে তাই অস্বাভাবিক কিছু চোখে পড়বে না। কিন্তু মনোযোগ দিয়ে দেখলে বোঝা যায়, ছবিটি শুধু পুলিশি নিষ্ঠুরতার অকাট্য দলিলই নয়, এতে অনেক গুরুতর আইনি প্রশ্নও নিহিত আছে। ভোলায় পুলিশের গুলিতে বিরোধী দল বিএনপির দুজন স্থানীয় নেতা আবদুর রহিম ও নুরে আলম নিহত হওয়ায় বিক্ষোভ-প্রতিবাদ মোকাবিলায় পুলিশি কৌশলে নিষ্ঠুরতার অভিযোগ ওঠার পরও এমন নির্মম পিটুনির ঘটনাটি ঘটেছে। পুলিশের গুলিতে মৃত্যুর ঘটনা নিঃসন্দেহে অনেক বেশি গুরুতর। কেননা, যেভাবে মাথা ও বুকে গুলিবিদ্ধ হয়ে ওই দুজনের মৃত্যু হয়েছে, তাতে আলামত মেলে হত্যার উদ্দেশ্যেই গুলি চালানো হয়েছিল। নয়তো মিছিল ছত্রভঙ্গ করার জন্য শূন্যে গুলি ছুড়ে ভয় দেখানোর কথা। খুব বেশি হলে শরীরের নিচের দিকে, অর্থাৎ পায়ে গুলি করার কথা, মাথায় বা বুকে নয়।


গুলি করা ও হত্যার ঘটনার কিছুটা প্রতিবাদ হলেও মিছিল ভাঙতে পিটুনির বিষয়ে কেউ খুব একটা মাথা ঘামাচ্ছে বলে মনে হয় না। পুলিশ যেমন আত্মরক্ষা বা অন্য কারও জীবন রক্ষার প্রয়োজনে বাধ্য না হলে গুলি করার কথা নয়, ঠিক তেমনি মিছিল-সমাবেশ ভেঙে দিতে লাঠির ব্যবহারেও তারা নির্দিষ্ট আইনি বিধানের বাইরে যেতে পারে না।


ছবিতে পুলিশের পাশাপাশি বেসামরিক বা সাধারণ পোশাকের কিছু লোককেও বিক্ষোভকারীদের ওপর চড়াও হতে দেখা যাচ্ছে, যাঁদের মধ্যে একজন পুলিশ লেখা জ্যাকেট বা বক্ষবেষ্টনী পরে আছেন, কিন্তু অন্যদের পরিচয় বোঝার কোনো উপায় নেই। ইউনিফর্ম ছাড়া যাঁরা পিটুনি দিচ্ছেন, তাঁরা যে পুলিশ না হয়ে অন্য কেউও হতে পারেন, সে রকম দৃষ্টান্তের অভাব নেই। পুরান ঢাকায় বাসদের বিক্ষোভে পুলিশ-ছাত্রলীগের হামলা (ইত্তেফাক, ২৩ নভেম্বর ২০১৯) কিংবা আন্দোলন দমাতে পুলিশ-ছাত্রলীগ, ঢাবি ক্যাম্পাসে ভীতি-উত্তেজনার (সারা বাংলা ডট নেট, ৮ এপ্রিল ২০১৮) মতো শিরোনামগুলো এখানে স্মরণ করা যায়। চলতি বছরেই সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়েও আন্দোলনকারীদের ওপরে প্রথমে ছাত্রলীগ এবং পরের রাতে পুলিশের হামলার ঘটনা ঘটেছিল। গত ১৭ জানুয়ারির সমকাল–এ ছাপা হওয়া পুলিশি অভিযানের ছবিতেও দেখা যাচ্ছে, কেউ কেউ জিনসের ট্রাউজার আর টি-শার্ট পরে লাঠি চালাচ্ছেন।


এসব দৃষ্টান্তের আলোকে প্রশ্ন হচ্ছে, পুলিশ কি ছাত্রলীগ বা অন্য কোনো সংগঠনের সদস্যদের সঙ্গে একজোট হয়ে বা সমন্বয় করে সরকারবিরোধী আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে পিটুনি অভিযান পরিচালনা করছে? আর সাধারণ পোশাকের লাঠিয়ালেরা যদি কোনো রাজনৈতিক দলের সদস্য না হন, তাহলে কি তাঁরা পিটুনিকাজের জন্য বিশেষভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত পান্ডা? আর যদি তা-ও না হন, তাহলে কি তাঁরা পুলিশ বাহিনীর সদস্য? পুলিশ বাহিনীর সদস্য হলে সভা-সমাবেশের শৃঙ্খলা রক্ষায় তাঁরা কেন ইউনিফর্ম পরবেন না? পায়ে স্পঞ্জের চপ্পল আর টি-শার্ট পরা পুলিশ আর একজন দুর্বৃত্তের মধ্যে ফারাক করা যাবে কীভাবে? এ রকম লাঠিয়ালদের হামলার বিরুদ্ধে প্রত্যেক নাগরিকের তো আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও