কী বার্তা দিয়ে শুরু করলেন নতুন গভর্নর
আব্দুর রউফ তালুকদার বাংলাদেশ ব্যাংকের ১২তম গভর্নর হিসেবে চার বছরের জন্য দায়িত্ব নিয়েছেন ১২ জুলাই। তিনি মূলত প্রশাসন ক্যাডারের একজন আমলা ছিলেন। আমলারা গভর্নর হতে পারবেন না, তা নয়। পাশের দেশ ভারতের ২৫ জন কেন্দ্রীয় ব্যাংক গভর্নরের মধ্যে পাঁচজনই ছিলেন জাঁদরেল আমলা। বর্তমান গভর্নর শক্তিকান্ত দাসও আমলা থেকেই গভর্নর হয়েছেন। আব্দুর রউফ তালুকদার যেমন এর আগে অর্থসচিব ছিলেন, শক্তিকান্ত দাসও একসময় অর্থ মন্ত্রণালয়ের রাজস্ব ও অর্থনৈতিক বিষয়ক সচিব ছিলেন।
রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার ২২তম গভর্নর ডি সুব্বারাও একজন আমলা ছিলেন। তিনিও গভর্নর হওয়ার আগে অর্থসচিব ছিলেন। বিশ্বব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ হিসেবেও কাজ করেছেন। তাঁকে একজন সফল গভর্নর বলেই মানা হয়। সুতরাং আমলা হলেও যে ভালো কেন্দ্রীয় ব্যাংক গভর্নর হওয়া যাবে না, তা নয়। তবে সমস্যা হয় তখনই, যখন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর হয়েও কেউ কেউ শেষ পর্যন্ত আমলাই থেকে যান। যেমন বাংলাদেশ ব্যাংকের ১১তম গভর্নর ফজলে কবির। প্রশাসন ক্যাডারের সাবেক এই সদস্য অর্থসচিবের দায়িত্বেও ছিলেন। মেয়াদ শেষ হলেও তাঁকে গভর্নর পদে রাখার জন্য সরকার আইন পর্যন্ত পরিবর্তন করেছিল। অথচ বিদায়ের আগে বলে গেছেন গভর্নরের পদটি তিনি উপভোগই করেননি।
আমলা বনাম গভর্নর নিয়ে ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার ২৪তম গভর্নর রঘুরাম জি রাজন তাঁর বইয়ে লিখেছেন, ‘সর্বক্ষেত্রেই একটি ভুল করা হয় রিজার্ভ ব্যাংকের গভর্নরকে শুধু একজন অন্যদের মতোই আমলা ভেবে। গভর্নর নিজেও যদি সেই ভুল ধারণার বশবর্তী হন, তাহলে তিনি শুধু সরকারের আজ্ঞাবহ দাস হয়ে পড়েন এবং দেশকে কীভাবে অর্থনৈতিক দুর্দশা থেকে উদ্ধার করা যেতে পারে, সে বিষয়ে তাঁর স্বাধীন প্রযুক্তিনির্ভর দিশা দেখাতে পারেন না।’
রঘুরাম জি রাজন আনুষ্ঠানিকভাবে গভর্নরের দায়িত্ব নিয়েছিলেন ২০১৩ সালের ৪ সেপ্টেম্বর। এর আগের প্রায় এক মাস তিনি নিয়মিত ব্যাংকে যেতেন। সেখানে তিনি তাঁর ভবিষ্যৎ সহকর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করে কাজের পদ্ধতি ঠিক করে নিয়েছিলেন। রঘুরাম রাজনকে বিশ্বের অন্যতম সেরা কেন্দ্রীয় ব্যাংক গভর্নর মনে করা হতো।