জিডিপি বাজেট এবং নারীর শ্রম
বাজেট যেমন অর্থনৈতিক দলিল, তেমনি একটি রাষ্ট্রের নীতিগত অবস্থান বুঝতে পারার ধারণাপত্র। রাষ্ট্র কার কাছ থেকে নেবে এবং কাকে গুরুত্ব দেবে তা নির্ধারিত হয় বাজেটে। আর জিডিপি থেকে বুঝতে পারা যায় একটা দেশের বার্ষিক কৃষি, শিল্প এবং সেবা খাত মিলে যা কিছু উৎপাদন তার আর্থিক মূল্য কত। এটা তো সবাই জানেন, মানুষের শ্রম তা শারীরিক বা মানসিক যাই হোক না কেন এই শ্রম ছাড়া কিছুই উৎপাদন হয় না। শ্রমের ক্ষেত্রে নারী-পুরুষ কিংবা ধর্মীয় পরিচয় কোনো পার্থক্য সৃষ্টি করে না। তাহলে নারীর শ্রম কেন যথাযথ মূল্যায়িত হয় না সে প্রশ্ন আজ অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে।
শ্রমের মূল্য বিষয়ে পাঠ্যপুস্তকে পড়েনি আর সামাজিক আলোচনা শোনেনি এমন মানুষ খুব কমই পাওয়া যাবে। শ্রমশক্তি যখন থেকে পণ্য হয়েছে, তখন থেকে শুধু মূল্য নয় শ্রমের দাম আলোচনায় এসেছে এবং শ্রমশক্তির দাম অর্থাৎ মজুরি পাওয়া ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন গড়ে উঠেছে পৃথিবীর দেশে দেশে। মে দিবস তার সবচেয়ে বড় দৃষ্টান্ত। ১৮৮৬ সালের ১ মে ৮ ঘণ্টা কর্মদিবসের আন্দোলন তুঙ্গে ওঠার আগে ১৮৫৭ সালে আমেরিকার সুতা কারখানার নারী শ্রমিকরা তাদের কর্মঘণ্টা, মজুরি বৈষম্য, কাজের অমানবিক পরিবেশের বিরুদ্ধে এবং ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার দাবি নিয়ে রাজপথে নামে। পুলিশি নিষ্ঠুর আক্রমণে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় সেই প্রতিবাদ ও দাবির আন্দোলনকে। কিন্তু আন্দোলন শেষ হয়নি, বরং নতুন রূপ নিয়েছে, নতুন দাবি সংযোজিত হয়েছে। তেমনি এক দাবি গৃহকর্মের স্বীকৃতি ও নারীর গৃহস্থালি কাজের মূল্যায়নের দাবি।