রানা প্লাজা ধস: বিচার চলছে ৯ বছর ধরে
৯ বছর আগে রাজধানীর অদূরে সাভারে রানা প্লাজা (আটতলা বাণিজ্যিক ভবন) ধসে এক হাজার ১৩৪ জন পোশাককর্মী নিহত হন। আহত হন আরো অন্তত দুই হাজার জন। ভয়াবহতম এই দুর্ঘটনায় সে সময় হত্যা ও ইমারত নির্মাণ আইনে দুটি মামলা করা হয়। ছয় বছর আগে এ দুই মামলার অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। তবে বিচারকাজ এগোয়নি খুব একটা। ভবন মালিক সোহেল রানা ছাড়া সব আসামি জামিনে আছেন।
অভিযোগ গঠনের ছয় বছর পর চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। মামলার বাদী সাভার থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) ওয়ালী আশরাফ আদালতে সাক্ষ্য দেন। গত ১৬ এপ্রিল তাঁর জেরা শেষ করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। আগামী ২৯ মে মামলাটির পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন ধার্য আছে।
আর ইমারত নির্মাণ আইনের মামলায় জেলা ও দায়রা জজ আদালতে কয়েকজন আসামি রিভিশন আবেদন করেন। এঁদের মধ্যে ফ্যান্টম অ্যাপারেলস লিমিটেডের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আমিনুল ইসলামকে মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া মামলার আসামি সাভার পৌরসভার সাবেক মেয়র মো. রেফাতউল্লাহর পক্ষে গত বছরের ৭ নভেম্বর এক বছরের জন্য মামলার বিচারিক কার্যক্রম স্থগিতের আদেশ দেন উচ্চ আদালত। ফলে অভিযোগ গঠনের ছয় বছর পরও সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়নি।
হত্যা মামলা
২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে রানা প্লাজা ভবন ধসে পড়লে তার নিচে চাপা পড়েন সাড়ে পাঁচ হাজার পোশাক শ্রমিক। ওই দুর্ঘটনায় এক হাজার ১৩৪ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। আহত ও পঙ্গু হন আরো অন্তত দুই হাজার শ্রমিক। ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে দুই হাজার ৪৩৮ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়।
ওই দুর্ঘটনায় সাভার থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ওয়ালী আশরাফ ‘ভবন নির্মাণে অবহেলা ও ত্রুটিজনিত হত্যা’র অভিযোগ এনে মামলা করেন। ২০১৫ সালের ২৬ এপ্রিল সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার বিজয়কৃষ্ণ কর ভবন মালিক সোহেল রানাসহ ৪১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলায় সাক্ষী করা হয় ৫৯৪ জনকে। আর মামলার ৪১ আসামির মধ্যে ভবন মালিক সোহেল রানার বাবা আব্দুল খালেক, আবু বক্কর সিদ্দিক ও আবুল হোসেন মারা যান। এই তিনজনকে বাদ দিয়ে হত্যা মামলায় বর্তমানে আসামি ৩৮ জন।
২০১৬ সালের ১৮ জুলাই ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ এস এম কুদ্দুস জামান আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।