তালিকা হচ্ছে বিতর্কিত মন্ত্রী-এমপিদের
স্বজনপ্রীতি ও নেতাকর্মীদের অবমূল্যায়নের অভিযোগ যাদের বিরুদ্ধে রয়েছে, আওয়ামী লীগের সেসব সংসদ-সদস্য মনোনয়ন পাবেন না। যেসব এমপি বিএনপি-জামায়াতের অনুপ্রবেশকারীদের মদদ ও প্রশ্রয় দিয়ে যাচ্ছেন তাদের তালিকা হচ্ছে। দুর্নীতি, অনিয়ম ও জমি দখলের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে যাদের বিরুদ্ধে, তারাও পার পাচ্ছেন না। তাদের ব্যাপারে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তিনি ঘুস-দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ায় সম্প্রতি একজন মন্ত্রীকে তার ছেলের লাগাম টেনে ধরার জন্য বলেছেন। আওয়ামী লীগের উচ্চপর্যায়ের একাধিক সূত্র যুগান্তরকে এসব তথ্য জানিয়েছে।
দলের ওইসব সূত্র আরও জানায়, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই দীর্ঘ হচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের এমন বিতর্কিত মন্ত্রী-এমপির তালিকা। শক্তিশালী বিরোধী দলের অংশগ্রহণে আগামী বছর ডিসেম্বরে অনুষ্ঠেয় সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ভাবনায় নিয়ে বিতর্কিতদের বাদ দেওয়ার পরিকল্পনা করছে আওয়ামী লীগ। তাই মন্ত্রী-এমপিদের ব্যাপারে দেওয়া সরকারের বিভিন্ন সংস্থার রিপোর্টগুলো এখন গুরুত্বের সঙ্গে পর্যালোচনা করা হচ্ছে। সেখানে ভয়ংকর সব তথ্য বেরিয়ে আসছে। কয়েকজন মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের শতাধিক এমপির নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের চিত্র উঠে এসেছে।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের উচ্চপর্যায়ের একাধিক সূত্র যুগান্তরকে এসব তথ্য জানিয়ে বলেছে, মন্ত্রী-এমপিদের কর্মকাণ্ডের তথ্য সংগ্রহের এই কাজটি নিয়মিতই করা হয়। তাদের কর্মকাণ্ড মনিটরিং অতীতেও হয়েছে। কিন্তু অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করেছেন বর্তমান সংসদে সরকারি দলের অনেক এমপি। তারা বিএনপি-জামায়াতের নেতাদের আওয়ামী লীগে এনে যেমন পুনর্বাসন করেছেন, তেমনই আত্মীয়স্বজনকে নিয়ে গড়ে তুলেছেন পৃথক বলয়। তাদের ভেদ করে মন্ত্রী-এমপিদের কাছে যেতে পারেন না আওয়ামী লীগের দুঃসময়ের ত্যাগী নেতাকর্মীরা।
এ ধরনের কাজ করতে গিয়ে সব সময় যে মন্ত্রী-এমপিরা লাভবান হয়েছেন তাও নয়। রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পদে যাওয়ার সিগন্যাল পেয়েও শুধু ছেলেদের কারণে কপাল পুড়েছে আওয়ামী লীগের একজন প্রবীণ নেত্রীর। ওই নেত্রীর ঘনিষ্ঠ একজন যুগান্তরকে এ তথ্য জানিয়ে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে গুরুত্বপূর্ণ একটি পদ গ্রহণের জন্য অগ্রিম প্রস্তুতি নিতে বলেছিলেন। বিষয়টি তিনি সঙ্গে সঙ্গেই পরিবারের সদস্য ও ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক সহকর্মীদের জানান। ওই সময় সরকারি একটি সংস্থা আওয়ামী লীগের প্রবীণ ওই নেত্রীর ছেলেদের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর কাছে নেতিবাচক রিপোর্ট দেয়। সেখানে বলা হয়, ছেলেরা তার সব কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণ করেন। ফলে বাদ পড়েন তিনি। ওই পদে আসেন হাওড়াঞ্চলের একজন জনপ্রিয় সংসদ-সদস্য।