অস্থিতিশীল দক্ষিণ এশিয়া বাংলাদেশের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ
দূরে হলেও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের আঁচ ইতোমধ্যে পেতে শুরু করেছে বাংলাদেশ। এরই মধ্যে প্রতিবেশী শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে, যা বাংলাদেশের জন্য ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। এ বিষয়ে বাংলাদেশকে সতর্ক অবস্থানে থাকা দরকার বলে মনে করেন সাবেক পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক। তিনি বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ায় অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে বাংলাদেশও এর থেকে দূরে থাকতে পারবে না এবং এ জন্য তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখা প্রয়োজন।’
শহীদুল হক বলেন, ‘প্রতিটি দেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতির কারণে সমস্যাগুলোর উদ্ভব হয়েছে। তবে কয়েকটি বিষয় সব দেশের জন্য প্রযোজ্য।’ সুশাসনের অভাব ও ইউরোপ সংকটের কারণে বিভিন্ন পণ্যের দাম বৃদ্ধি মোটামুটি সব দেশের জন্য প্রযোজ্য বলে মনে করেন তিনি।
এছাড়া সংকট মোকাবিলায় জাতিসংঘের চরম ব্যর্থতা এবং বৈশ্বিক ঋণদানকারী সংস্থা বিশ্ব ব্যাংক ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল থেকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা না পাওয়াও সমস্যা সৃষ্টির অন্যতম কারণ বলে মনে করেন পররাষ্ট্র সচিব।
শহীদুল হক বলেন, ‘নতুন করে সংঘটিত শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তান সংকট এবং এক বছরের বেশি সময় ধরে চলমান মিয়ানমারের রাজনৈতিক সংকট বাংলাদেশের জন্য এখনও বড় ধরনের সমস্যা তৈরি না করলেও প্রতিবেশীর যেকোনও সমস্যার প্রভাব অন্যদের ওপর পড়ে থাকে।’
প্রতিবেশীর সমস্যা
গত দুই বছর ধরে শ্রীলঙ্কায় অর্থনৈতিক সমস্যা বিরাজ করছে, যা সাম্প্রতিক সময়ে প্রকট আকার ধারণ করেছে। একদিকে খাদ্যপণ্যের দাম আকাশ ছুঁয়েছে, অপরদিকে জ্বালানি না থাকায় বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারছে না দেশটি। প্রয়োজনীয় জ্বালানি ক্রয় করার জন্য প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রাও নেই দেশটির কাছে। দেশে জনবিক্ষোভ ঠেকানোর জন্য কারফিউয়ের মতো অজনপ্রিয় পদক্ষেপও নিতে বাধ্য হচ্ছে সরকার।
এদিকে ভুল পররাষ্ট্রনীতি এবং অভ্যন্তরীণ ক্ষমতার দ্বন্দ্বের অংশ হিসেবে পাকিস্তানে ইমরান খানের সরকারকে সমস্যা মোকবিলা করতে হচ্ছে। ইতোমধ্যে ইমরান খানের অনুরোধের প্রেক্ষিতে ওই দেশের প্রেসিডেন্ট সংসদ ভেঙে দিয়েছে। ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া যখন ইউক্রেন আক্রমণ করে, সে সময় রাশিয়া সফরে ছিলেন ইমরান খান। পরে রাশিয়াকে প্রচ্ছন্নভাবে সমর্থন অনেকে ভালোভাবে না নেওয়ায় সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়।