নতুন এডিপিতে অর্থ বরাদ্দে কড়াকড়ি
আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য নতুন বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) তৈরির কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এবার প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দের ক্ষেত্রে কড়াকড়িসহ ৫২টি নির্দেশনা দিয়েছে পরিকল্পনা কমিশন। ১০ মার্চ এ সংক্রান্ত একটি পরিপত্র জারি করেছে সংস্থাটি।
তবে এসব নির্দেশনা মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো মানবে কিনা তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, প্রতি বছর এমন নির্দেশনা দেওয়া হলেও এর কতটুকু বাস্তবায়ন হয়- সেটার কোনো মূল্যায়ন করা হয়নি। এসব নির্দেশনা না মানলে শাস্তি অথবা মানলে পুরস্কার দেওয়ার ব্যবস্থা না থাকায় কর্মকর্তাদের মধ্যে শৈথিল্য দেখা যায়।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পরিকল্পনা সচিব প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী রোববার যুগান্তরকে বলেন, আমরা শুধু নির্দেশনা দিয়ে ক্ষান্ত হয়নি। প্রথমবারের মতো বাজেট তৈরির সঙ্গে যুক্ত ৫৮টি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ধারাবাহিক (সিরিজ) বৈঠক করেছি। তাদের বলেছি- এসব নির্দেশনা মানতেই হবে। একইসঙ্গে তদারকি বাড়ানোর জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে। নির্দেশনা দিয়ে আমরা দায়িত্ব শেষ করেছি-বিষয়টি এমন নয়।
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক লিড ইকোনমিস্ট ড. জাহিদ হোসেন বলেন, এমন বৈঠক কতটা ফলপ্রসূ হবে সেটি প্রশ্নসাপেক্ষ। কেননা নির্দেশনা জারির সঙ্গে এবার যোগ হয়েছে বৈঠক করে তাগিদ দেওয়ার বিষয়টি। কিন্তু আচরণ পরিবর্তনে এ ধরনের তাগিদ কতটা কার্যকর হবে সেটি নিয়ে যথেষ্ট সংশয় আছে। তিনি বলেন, নির্দেশনা না মানলে কে দায়ী থাকবেন এবং কী ধরনের শাস্তি ভোগ করবেন-সে ব্যাপারে নীতিমালা জারি করা হলে গেম চেঞ্জের মতো সম্ভাবনা থাকত।
পরিকল্পনা কমিশনের কার্যক্রম বিভাগ থেকে জারি করা পরিপত্রে বলা হয়-উচ্চতর প্রবৃদ্ধি অর্জনের মাধ্যমে মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি করে দারিদ্র্য হার কমানোর জন্য সরকার বিভিন্ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে। এসব পরিকল্পনার লক্ষ্য-জনগণের জীবনমানের উন্নয়ন ঘটানো। ২০২১-৪১ সাল পর্যন্ত প্রেক্ষিত পরিকল্পনা, অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা, বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এছাড়া বর্তমান সরকার শহরের সুবিধা গ্রামে পৌঁছে দিতে কাজ করছে। একইসঙ্গে জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) সঙ্গে সমন্বয় করে উন্নয়ন নীতি-কৌশল তৈরি করা হয়েছে। এসব বাস্তবায়নের লক্ষ্য অর্জনের প্রধান মাধ্যম হলো এডিপি। ২০২২-২৩ অর্থবছরের এডিপি তৈরির সময় খাতওয়ারী বরাদ্দ বিভাজন, অনুমোদিত প্রকল্প, বরাদ্দহীন অননুমোদিত নতুন প্রকল্প যুক্ত করার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে।