বিয়েটা না করলেই বরং জানে বেঁচে থাকতাম: ন্যান্সি
‘আমার আর মেহেদীর সংসার জীবনের বয়স সাত মাস। এদিকে আমি অন্তসত্ত্বা। আমাদের দুজনের জন্যই নতুন করে অল্প দিনের পরিচয়ে একজন আরেকজনের জীবন সঙ্গী হওয়ার সিদ্ধান্ত টুকু নেওয়া কঠিন ছিল। এরই মধ্যে একটি নতুন প্রাণের জন্ম দেওয়া যেন আনন্দের চাইতেও দ্বিগুন ভীতি। আমার দুই ভাই, ভাবী এবং রোদেলা বাদে দুই পরিবারের কোনো সদস্যদের নতুন অতিথির আগমনের সংবাদে নেই কোনো উচ্ছাস, উল্টো রয়েছে বিদ্রুপ মেশানো হতাশা।’
‘সেই সঙ্গে নতুন অতিথির আগমনের সংবাদে অর্থ বা সম্পদ বন্টনে কে কী পাবে আর কী হারাবে সে সব নিয়ে রয়েছে চুলচেরা হিসাব! আমি নিজেও যেন ভাবতে বসলাম, আচমকাই গোলক ধাঁধায় পড়ে গেলাম। মনে হলো স্বস্তি খুঁজতে গিয়ে অশান্তিকে দাওয়াত দিয়ে নিয়ে এলাম। বিয়েটা না করলেই বরং প্রাণে না হলেও জানে বেঁচে থাকতাম।’
দুজনই ভালোবেসে যার হাত ধরেছিলাম সেটা যে কোনো কারণেই হোক, শেষ পর্যন্ত টেকাতে পারিনি। জীবন চলায় ব্যর্থতার তকমা কপালে জুটেছে। এখন দুজন দুজনের কাছে ভালোবাসার পাত্র-পাত্রী হওয়ার চাইতেও আস্থার হয়ে ওঠাটাই যেন বড় পরীক্ষা! আর প্রতিদিনকার জীবন যাপন করার প্রক্রিয়া দুজনের এতটাই ভিন্ন যে সেটা রপ্ত করাটাও বেশ সময় সাপেক্ষ ব্যাপার! খাওয়া, ঘুমানো, আবেগ-অনুভূতি প্রকাশ করার ভঙ্গি, নিত্যদিনের কথা বলা, মত প্রকাশ, গান শোনা, সিনেমা দেখা, ঘুরতে যাওয়া, কাছে আসা- এর সবই যেন নতুন করে শেখার বিষয়! মনে হলো অল্প দিনেই বেশ হাঁপিয়ে উঠেছি।’
‘পূর্বের সংসারে সন্তান যেহেতু আছে, কাজেই তাদের সঙ্গে যোগাযোগও আছে। সন্তানদের কারণে উভয়ের জীবনেই প্রাক্তনদের উপস্থিতি আছে। সেটা উভয়ের সবসময় মন থেকে সহজভাবে মেনে নেওয়াটা কঠিন। এ যেন শেষ হয়েও হলো না শেষ। তার ওপর হঠাৎ খেয়াল করলাম আমাদের চাইতেও আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যত নিয়ে নাটকীয় উদ্বেগ অন্য অনেকের যেন উথলে উঠছে।’