ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ ও করোনা প্রতিরোধ
অসংক্রামক রোগ হিসেবে ডায়াবেটিস আবহমান কাল থেকে ক্রমশ অতিমারী আকারে অগ্রসরমান আর সংক্রামক রোগ করোনা উড়ে এসে জুড়ে বসা সাম্প্রতিক কালের মহামারী। ডায়াবেটিস নীরব ঘাতক, আজীবনের রোগ। একে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলে সমূহ সর্বনাশ সাধন থেকে তাকে দূরে রাখা যায়, কিন্তু করোনা বড্ড বিধ্বংসী, লক্ষ্যভেদী। সে কারণে নিয়ন্ত্রণ নিরাময়ের চেয়ে তাকে প্রতিরোধই প্রধান উপায়। করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তি চিকিৎসায় ‘সেরে’ উঠতে পারে তবে তাকে মানসিক ও শারীরিকভাবে যে ক্ষতি সে করে সেটি আজীবনের জন্য যথেষ্ট বিড়ম্বনাদায়ক। সুতরাং সংগতকারণে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে এবং করোনা প্রতিরোধে সচেতনাতার ভূমিকাকে অগ্রগণ্য বিবেচনা করা হচ্ছে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে নিয়ে বেঁচে থাকা এবং করোনার সঙ্গে সচেতন সতর্ক সহাবস্থান সে নিরিখে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অ-সংক্রামক এবং সংক্রামক উভয় রোগের ক্ষেত্রেই রোগীকে এবং রোগীর দেখভালকারীদের অবশ্যই সচেতন বা দায়িত্বশীল হতে হবে।
দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার প্রায় সবক’টি দেশই কয়েক দশক ধরে স্বাধীনতা ভোগ করে এলেও দেশগুলো আজও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, মূল জাতীয় উৎপাদনের (জিডিপি) স্বল্পতা, অক্ষরজ্ঞানের নিম্নহার, অনুন্নত কৃষিভিত্তিক অর্থনীতি, অপর্যাপ্ত জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থা, ব্যাপক অপুষ্টি, উচ্চজন্ম ও শিশুমৃত্যুর হার এবং পৌনঃপুনিক প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে সংগ্রাম করে চলছে। এতসব সমস্যা থাকা সত্ত্বেও বিভিন্ন সংক্রামক ব্যাধি দমনের সঙ্গে সঙ্গে এই অঞ্চলের অধিবাসীদের আয়ুষ্কাল ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে। পক্ষান্তরে বিভিন্ন দীর্ঘমেয়াদি রোগ, যথা ডায়াবেটিস মেলাইটাস, উচ্চ রক্তচাপ ইত্যাদির প্রকোপ বেড়েছে। আর কভিড-১৯ নামে খ্যাত করোনা বিশ্বব্যাপী মূর্তিমান মহামারী আকারে (এই মুহূর্তে যদিও কিছুটা নিষ্ক্রিয়) গত দুটি বছর বেশ দাপটে ছিল। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে করোনা নরমে-গরমে এখনো আতঙ্কের কারণ হিসেবে বিদ্যমান। করোনা প্রতিরোধে অনেক কর্মসূচি গৃহীত হলেও কমবেশি কার্যকর হতে পেরেছে বলার সময় এখনো আসেনি।