কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

গ্যাসের দাম বৃদ্ধি নয়, চুরি ঠেকান

সমকাল সাজ্জাদ কাদির প্রকাশিত: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৮:৫৩

গত নভেম্বরে হঠাৎ করে সরকার আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধিকে কারণ দেখিয়ে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম বাড়িয়েছে লিটারপ্রতি ১৫ টাকা। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের লোকসান কমানো এবং পার্শ্ববর্তী দেশে পাচার রোধের যুক্তিও দেওয়া হয়েছিল। যত যুক্তিই দেওয়া হোক করোনা মহামারির ভয়াবহ বিপর্যয়ের মধ্যে মানুষ যখন দিশেহারা, তখনই কেন হুট করে জ্বালানি তেলের দাম বাড়াতে হবে এ প্রশ্ন দেশবাসীর। অনাকাঙ্ক্ষিত হলেও এর মধ্যেই দেশবাসীর ঘাড়ে জ্বালানি তেলের দামের বাড়তি বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। সর্বশেষ ২০১৬ সালে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়। ৬ বছর কেটে গেছে এর মধ্যে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমলেও দেশের বাজারে তেলের দাম কমানো হয়নি। উল্টো দুর্যোগকালীন দুঃসময়ে দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে। গত দুই মাসে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির বিরূপ প্রভাব সাধারণ মানুষ হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে। এই বৃদ্ধি শুধু যে জ্বালানি তেলের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেনি, গণপরিবহনসহ বাজারের সব নিত্যপণ্যের ওপর গিয়ে পড়েছে। দেশে নীতি-নৈতিকতাহীন সুবিধাবাদি জনগোষ্ঠী সুযোগের অপব্যবহার করে। তেলের দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যৌক্তিকতার কয়েকগুণ দ্রব্যমূল্য বাড়িয়ে দিয়ে সাধারণ মানুষের জীবন বিপন্ন করে দিয়েছে। এই যখন অবস্থা, সাধারণ মানুষ যখন দ্রব্যমূল্যের ভারে ভারাক্রান্ত ঠিক এরই মধ্যে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির পাঁয়তারা শুরু হয়েছে।


গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, বিতরণ কোম্পানিগুলো গ্যাসের খুচরা মূল্য ১১৭ শতাংশ বা দ্বিগুণ বাড়ানোর প্রস্তাব বিইআরসিতে পাঠিয়েছিল। তাতে রান্নার জন্য দুই চুলার সংযোগে ৯৭৫ থেকে বাড়িয়ে ২১০০ টাকা এবং এক চুলার ব্যয় ৯২৫ থেকে বাড়িয়ে দুই হাজার টাকা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়! তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসে ভর্তুকি কমাতেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে বলে দাবি তাদের। কিন্তু গ্যাসের দাম বাড়ার আগেই বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। এ ক্ষেত্রে পিডিবি বলছে, গ্যাসের দাম বাড়ানো হলে বিদ্যুতের পাইকারি দাম বাড়াতে হবে। এর পরিপ্রেক্ষিতে উভয় পক্ষই প্রস্তাবনা দিয়েছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনকে (বিইআরসি)। অবশ্য বিধিবহির্ভূত হওয়ায় কমিশন প্রাথমিকভাবে তাদের প্রস্তাব ফেরত পাঠিয়েছে। তারপরও গ্যাস কোম্পানিগুলো নাছোড়বান্দা। এখন নতুন করে আবার আবেদন করতে শুরু করেছে বিতরণ কোম্পানিগুলো, যদিও এ মুহূর্তে গ্যাসের দাম বৃদ্ধির দৃশ্যমান কোনো কারণ দেখছে না নিয়ন্ত্রক সংস্থা।


যখন বৈশ্বিক মহামারিতে বিপর্যস্ত জনজীবন তখন গ্যাস-বিদ্যুতের এমন প্রতিযোগিতামূলক দাম বাড়ানোর পাঁয়তারায় আতঙ্ক বিরাজ করছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। বিশেষজ্ঞ মহলের মতে, বৈশ্বিক মহামারির এমন সময় গ্যাস-বিদ্যুৎ উভয়ের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হবে আত্মঘাতী। বরং বলতে চাই গ্যাসের দাম বৃদ্ধি নয়; গ্যাস চুরি ও অপচয় রোধ করা হোক। তাহলে ভর্তুকির বড় অঙ্ক বেঁচে যাবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বৈধ সংযোগ থেকে অবৈধ সংযোগের সংখ্যাই বেশি। সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মদদেই অবৈধ সংযোগ দেওয়া হয়। তবে অবস্থাদৃষ্টে প্রশ্ন জাগে, দেশের অর্ধেক গ্যাস সম্পদই কি চুরি হয়ে যায়? সংবাদমাধ্যমেই দেখেছি, রাজধানীর কড়াইল বস্তিতে খাতাকলমে তিতাসের বৈধ সংযোগ না থাকলেও প্রতিটি ঘরেই জ্বলে গ্যাসের চুলা। শুধু বাসা নয়, বস্তির দোকান আর রেস্তোরাঁগুলোতেও অবৈধ চুলা জ্বলে দিনে ১৬ থেকে ১৮ ঘণ্টা। অথচ গ্যাস সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের তথ্য অনুযায়ী এই বস্তিতে গ্যাসের কোনো বৈধ সংযোগ নেই। ব্যবহারকারীরা বলছেন, তিতাসের লোকজনের মাধ্যমেই পাওয়া যায় গ্যাস সংযোগ। রাজধানী এবং এর আশপাশে জালের মতো ছড়িয়ে আছে অবৈধ গ্যাস সংযোগ। এক কড়াইল বস্তির গৃহস্থালির প্রায় ১০ হাজার চুলা, দোকান-রেস্তোরাঁর ১ হাজার ৫০০ চুলা থেকে মাসে বিল ওঠে কম-বেশি আড়াই থেকে তিন কোটি টাকা। এর এক পয়সাও জমা হয় না সরকারি কোষাগারে। তাহলে এই টাকা যায় কোথায়?

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও