রাজধানীর হানিফ ফ্লাইওভারে পড়ে ছিল অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যাক্তির লাশ; লেগুনা চালকের সহকারী সেজে তদন্ত চালিয়ে সেই খুনের রহস্য উদঘাটন করেছেন পুলিশের একজন উপ পরিদর্শক, তার হাতে ধরা পড়েছে হত্যায় জড়িত চার ছিনতাইকারী।
যাত্রাবাড়ী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই বিলাল আল আজাদ জানান, এ ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে টানা পাঁচ দিন হেলপারি করে দিনে তিনশ টাকা আয় হয়েছে তার। শেষ পর্যন্ত ২৬ জানুয়ারি সফলতা আসে।
গ্রেপ্তার চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, লেগুনা নিয়ে যাত্রী তুলে ছিনতাই করত তারা। ফ্লাইওভারে যার লাশ পাওয়া গিয়েছিল, তার কাছ থেকে প্রায় ৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে লেগুনা থেকে ফেলে দিয়েছিল তারা। সেই টাকায় তারা পরে ইয়াবা কিনেও সেবন করেছে।
এসআই আজাদ বিডিনিউজ টোন্টিফোর ডটকমকে বলেন, গত ২২ জানুয়ারি ভোরে হানিফ ফ্লাইওভারে ওই ব্যক্তির লাশ পাওয়া যায়। সেদিন সন্ধ্যায় তার ছেলে মর্গে গিয়ে লাশ শনাক্ত করে। জানা যায়, ওই ব্যক্তির নাম মহির উদ্দিন, বয়স ৫০। তিনি একজন মাছ বিক্রেতা।
মহির উদ্দিন কীভাবে মারা গেলেন তা জানতে ফ্লাইওভারে সিসি ক্যামেরার ভিডিও সংগ্রহ করেন আজাদ। দেখতে পান, একটি চলন্ত লেগুনা থেকে তাকে ফেলে দেওয়া হয়। কিন্তু সেই লেগুনার কোনো নম্বর নেই। তবে পাদানির লাল রঙ নজর কাড়ে। তদন্তের দাযিত্ব পাওয়ার পর লাল পাদানির ওই লেগুনা খোঁজা শুরু করেন এসআই আজাদ। পরিচয় গোপন করে এক দালালের মাধ্যমে নিজের যাত্রাবাড়ী, সাইনবোর্ড, কোনাবাড়ী, ডেমরা, চিটাগাং রোড আর নারায়ণগঞ্জের জালকুড়ি রুটের একটি লেগুনায় চালকের সহকারীর কাজ নেন। শুরু হয় গোয়েন্দাগিরি। তার চেষ্টা ছিল চালক ও হেলপারদের সাথে মিশে হত্যার বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা। সেজন্য পরিবার বাদ দিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনুমতি নিয়ে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত হেলপারের ছদ্মবেশে তিনি সেই লাল পাদানির লেগুনার সন্ধান চালিয়ে যান।