হতাশা থেকে বেরোতে চাই
বছর দেড়েক আগের কথা বলছি। জামালপুরের এক পরিচিত ভদ্রলোকের ফোন পেয়েছিলাম। তিনি কাতর কণ্ঠে নিজের কথা বলছিলেন। নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষ। একটি কোম্পানিতে ছোটখাটো পদে চাকরি করেন। তা দিয়ে অতিকষ্টে সংসার চললেও তিন ছেলেমেয়ের লেখাপড়ার খরচ চালানো কঠিন। ছোট দুই মেয়ে স্কুলে পড়ে। বড় ছেলেটি স্থানীয় একটি সরকারি কলেজে ইতিহাস বিষয়ে অনার্স পড়ছে। বছরে দুবার তিনি ছেলেমেয়ের পড়াশোনার সহায়তার জন্য পরিচিতজনের কাছে ছুটে আসেন। একবার ভর্তির জন্য, আরেকবার পরীক্ষার ফি দেওয়ার জন্য।
আমার ধারণা, এদেশে এমন অভিভাবকের সংখ্যা নিতান্ত কম নয়। বছরের মাঝখানে তিনি কাতর কণ্ঠে ফোন করলেন। বললেন-স্যার, ছেলেটার লেখাপড়া বোধহয় চালানো যাবে না। কলেজ থেকে জানিয়েছে সরকারি আদেশ এসেছে অনলাইনে ক্লাস নিতে হবে। ছেলেকে এক্ষুনি একটি ল্যাপটপ কিনে দিতে হবে। করোনার কারণে বেতন ঠিকমতো পাচ্ছি না। রিলিফের চালের আশায় থাকতে হয়। এ আমি ল্যাপটপ কিনব কীভাবে? আমরা যারা মাটি-মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক রাখি, তারা জানি শুধু ল্যাপটপ নয়, ইন্টারনেটের ডেটা কেনার যে খরচ আছে এ সময়ে তা মেটানোর ক্ষমতা বড়সংখ্যক অভিভাবকেরই নেই।