মিয়ানমার : জান্তা, সু চি এবং গণতন্ত্রের যাত্রা
প্রায় সবসময়ই জান্তার শাসন ছিল মিয়ানমারে। ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি স্বাধীনতার পর থেকে খুবই স্বল্পসময়ের জন্য ওই দেশে গণতান্ত্রিক শাসন কার্যকর ছিল। তার মানে মিয়ানমারের সাধারণ মানুষ তেমনভাবে স্বাধীনতার স্বাদ পায়নি। দেশটি স্বাধীন হলেও তারা পরাধীনই ছিল জান্তা শাসনে। ভিনদেশি শাসক আর জান্তাদের মধ্যে চেতনাগতভাবে তেমন কোনো পার্থক্য নেই।
সেটা বহুভাবেই মিয়ানমারের জনগণ বুঝেছে। তাই আজ তারা গণতন্ত্রের জন্য লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়তে যাচ্ছে। দিন কয়েক আগে সামরিক আদালতে বিচার করে গণতন্ত্রের মানসপুত্রীখ্যাত শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অং সান সু চিকে চার বছর জেল দেয়া হয়। করোনাবিধি ভঙ্গ এবং বর্তমান সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে জনগণকে উসকে দেওয়ার অপরাধে তাকে ২+২=৪ বছরের জেল দেয়া হয়। কিন্তু বিশ্বব্যাপী প্রতিবাদ ও ঘৃণা প্রকাশের পর সেনাপ্রধান চার বছরের জেল দুই বছরে নামিয়ে আনেন। সুচি’র বিরুদ্ধে আরও ৯টি মামলা করেছে জান্তা সরকার।
সেগুলোর বিচারও রাজধানীর নেপিডোতে স্থাপিত সামরিক আদালতেই হবে। ধারণা করা হচ্ছে ওইসব মামলায় তার ১০০ বছরের জেল হতে পারে। সু চির বয়স এখন ৭৬ । তিনি মিয়ানমারের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার প্রতীক হয়ে ওঠেন যখন তিনি আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন এবং গৃহবন্দিত্ব যাপন করছিলেন। তিনি ১৫ বছরই জান্তা সরকারের হাতে গৃহবন্দির জীবন যাপন করেছেন। সেই ১৯৮৯ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত তিনি গৃহবন্দি ছিলেন। তারপর তিনি রাজপথে আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছেন। তার দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্র্যাসি [এনএলডি] বিজয়ী হয়ে ক্ষমতায় যায় এবং তিনি স্টেট কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। ক্ষমতায় যাওয়ার পরপরই তিনি তিনটি আইনের দুটি বাতিল করেন একটি সংস্কার করেন।