বরিশালের 'মধুরেণ সমাপয়েৎ'
দেশের কোথাও কোনো অনাসৃষ্টি নিয়ে তোলপাড় হলে যদি কোনোভাবে সামাল দেওয়া যায় তখন হাঁফ ছেড়ে বলা যায়, ওটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা। আমাদের বড় কোনো সমস্যা নেই। শাসনকার্য ঠিকঠাক চলছে।
তাহলে তো নাকে তেল দিয়ে ঘুমানোই যায়। কিন্তু 'বিচ্ছিন্ন ঘটনা' যদি বিরতি দিয়ে দিয়ে এখানে-ওখানে বারবার ঘটে?
গত সপ্তাহে বরিশালে যে অনভিপ্রেত ঘটনায় সরকারি প্রশাসন, নগরের মেয়রসহ আওয়ামী লীগের একাংশের নেতাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব প্রকাশ্য হয়ে উঠল, পাল্টাপাল্টি মামলা হলো, দু'দিন সিটি করপোরেশনের কাজ ও গণপরিবহনে অচলাবস্থা সৃষ্টি হলো, তাকে স্পষ্টত উচ্চ পর্যায়ের চাপে 'ভুল বোঝাবুঝির ফল' বলে এবং 'মিটে গেছে' বলে প্রশমিত করার চেষ্টা হলেও খাটো করে দেখা যাবে না। টানা চার দিন যে ঘটনার জের চলে- তথা সিটি করপোরেশন অফিসে কর্মবিরতিসহ অচলাবস্থা, তিন দিন শহরে আবর্জনা পরিস্কার না করে এবং গণপরিবহন অচল রেখে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি, স্বয়ং মেয়রেরও সপ্তাহকাল অফিসে অনুপস্থিতি- সেই ঘটনাকে আকস্মিক ও বিচ্ছিন্ন বলা আত্মপ্রবোধ হতে পারে, তবে ঘটনার পটভূমি, কারণ ও গুরুত্ব অনুধাবন, সংশ্নিষ্ট সমস্যার সমাধান ও ভবিষ্যতে এ রূপ ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ কোনোটারই সহায়ক হয় না। যে ধরনের ঘটনা বিচ্ছিন্নভাবে বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় কিছুদিন পরপরই ঘটতে দেখা যাচ্ছে এবং সে-কারণে আপাত বিচ্ছিন্ন মনে হলেও এক রকম ধারাবাহিকতা আছে তাকে বিচ্ছিন্ন বলে উড়িয়ে না দিয়ে তলিয়ে ভেবে দেখা দরকার। এ জাতীয় ঘটনার মধ্যে বরিশালেরটি ব্যাপ্তিতে সবচেয়ে বড় ও চরিত্রের দিক থেকে গুরুতর। বিশেষত, অভিযোগ করা হয়েছে নগরের শীর্ষ জনপ্রতিনিধির 'ইঙ্গিতে' উপজেলার শীর্ষ প্রশাসনিক কর্মকর্তার বাসগৃহে দলীয় কর্মীদের সংঘবদ্ধ আক্রমণের। এমনটা আগে ঘটেনি।