এই স্বর কার
রবীন্দ্রনাথ বলেছেন- 'সহজ কথায় লিখতে আমায় কহ যে,/ সহজ কথা যায় না লেখা সহজে'। সত্যিই সহজ করে সহজ কথাটি লেখা বা বলা যায় না। খুব কম মানুষ আছেন, যারা হৃদয়ের টান, হাতের কলম আর চিন্তার জোরে সহজ বা কঠিন যে কোনো বিষয়কে সহজে বলতে পারেন। তাদের একজন অধ্যাপক যতীন সরকার। আজ ১৮ আগস্ট তার ৮৬তম জন্মদিন। যতীন সরকারের জীবন কেবল দীর্ঘই নয়, বিস্তৃতও।
কৈশোরে স্যারের যে বইটির প্রতি মুগ্ধতা পেয়ে বসেছিল তার নাম 'গল্পে গল্পে ব্যাকরণ'। ব্যাকরণের মতো জটিল বিষয়কে 'ব্যাকরণের নাম শুনলেই রুবীর গায়ে জ্বর আসে' বলে কঠিন সত্যকে সামনে রেখে আগান তিনি।
'ব্যাকরণের ভয় একেবারেই অকারণ', এমন মজার ছলে তিনি পাঠকদের নিয়ে যান বাঙলা ভাষা ও ব্যাকরণের দারুণ একটি আলাপে। বইটির শুরুটা এ রকম "'ব্যাকরণ যে একটি বিজ্ঞান, এ কথাটি মনে আছে তো? এ-কথাটা তুমি এতবার বলেছ মনে না থেকে পারে?' রুবী হাসতে হাসতে বলে।" বইটির নানান অধ্যায়ে সন্ধি, ক্রিয়া, পদ, বিভক্তি ও শব্দ তৈরির খেলা নিয়ে দারুণ সব আলাপ পেড়েছেন তিনি। এক পর্যায়ে লেখক রুবী আর চামেলির সঙ্গে আড্ডাচ্ছলে শব্দের বিবর্তন দেখাচ্ছেন এভাবে- "বুঝলে তো 'নবরঙ্গ' কী করে অরেঞ্জ হয়ে যায়? নবরঙ্গ>নওরঙ্গ> নারাঙ্গ> নারাঞ্জ> নরেঞ্জ. এ নরেঞ্জ> এন নরেঞ্জ"! হ্যাঁ, এভাবেই পাঠককে তাক লাগিয়ে দিতে জানতেন তিনি। বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত 'গল্পে গল্পে ব্যাকরণ' বাংলাদেশের শিশুসাহিত্যে এবং ব্যাকরণ গ্রন্থের ক্ষেত্রে একটি মূল্যবান কাজ।
- ট্যাগ:
- মতামত
- সাহিত্য চর্চা
- কবি
- লেখক
- ব্যাকরণ