কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

মোবাইলে ডুব, পরিবারের সঙ্গে দূরত্ব

মানবজমিন প্রকাশিত: ২৫ জুন ২০২১, ০০:০০

কেন আত্মহত্যা করলেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ফারহানুজ্জামান রাকিন। এর পেছনে কারণ কি? এ নিয়ে এখন নানা আলোচনা। কি কারণে আত্মহত্যার আগে একবার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কাউকে না  জানিয়ে উধাও হয়ে যান? তাকে খুঁজে না পেয়ে পরিবার আইনের আশ্রয় নেয়। প্রশাসন সপ্তাহখানেক পর একটি বিচ্ছিন্ন চরে তাঁবু টানিয়ে অবস্থান করা রাকিনকে উদ্ধার করে। নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি বিভাগের শিক্ষার্থী রাকিন ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী। দুই ভাইবোনের মধ্যে ছিলেন বড়। পরিবারের অনেক স্বপ্ন ছিল তাকে ঘিরে। কিন্তু এ স্বপ্ন ভেঙেচুরে এখন চারখার। পরিবারকে দুঃখের সাগরে ভাসিয়ে রাকিন এখন পরপারে। রাকিনদের গ্রামের বাড়ি চাঁদপুরের কচুয়া থানার শ্রীরামপুর গ্রামে। বাবা মনিরুজ্জামান প্রবাসী। মা ও বোনের সঙ্গে ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের মাটিকাটা এলাকার বাসায় থাকতেন রাকিন। পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাকিন করোনার এই সময়ে এক থেকে দেড় বছর বাসায় সারাক্ষণ মোবাইল ফোন হাতে ব্যস্ত থাকতেন। ফেসবুকে থাকতেন ব্যস্ত। ঠিকভাবে খাওয়া-দাওয়া করতো না। তার চাচা-মামা সকলে অনেক বোঝানোর পরও পরির্বন আসেনি খুব একটা। অনেক রাত পর্যন্ত জেগে থাকতো। আবার অনেক বেলা করে ঘুম থেকে উঠতো। কারও সঙ্গে ঠিকভাবে কথা বলতো না। সব মিলিয়ে কোনো কারণে ডিপ্রেশনে চলে যায় রাকিন। ক্যান্টনমেন্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী শাহান জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে এটি আত্মহত্যা। এ বিষয়ে অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন এখনো পাওয়া যায়নি। পারিবারিক মনোমালিন্য থেকেই এই ঘটনা ঘটেছে বলে জানান তিনি। পরিবার সূত্র জানায়, ২২ বছর বয়সী রাকিন ছোট থেকেই মৃদুভাষী। প্রয়োজন ছাড়া খুব বেশি কথা বলতো না। বরাবরই একা থাকতে পছন্দ করতো। গত ৩১শে মে ক্যান্টনমেন্টের নিজ বাসায় বাথরুমের শাওয়ারের সঙ্গে ডিশের তার বেঁধে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। রাকিনের আত্মহত্যায় ভেঙে পড়েছে তার পুরো পরিবার। রাকিনের এক বন্ধু বলেন, নোয়াখালী পৌর শহরের রশিদ কলোনির মেসে থেকে পড়ালেখা করতেন রাকিন। গত ২৬শে ফেব্রুয়ারি গ্রামের বাড়ি যাওয়ার কথা বলে রশিদ কলোনির মেস থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হয়। পরে একটি বিচ্ছিন্ন চর থেকে তাকে উদ্ধার করে পুলিশ। রাকিনের ওই বন্ধু বলেন, সারাক্ষণ কি যেন চিন্তা করতো সে। সামান্য কোনো বিষয়ে অস্থির হয়ে পড়তো। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তার মতের অমিল ছিল। যেটা নিয়ে খুব বেশি দুশ্চিন্তা করতো রাকিন। আত্মহত্যা করার কয়েকদিন আগে রাকিন তার ঘনিষ্ঠ একাধিক বন্ধুর সঙ্গে তার মন খারাপের বিষয়টি জানিয়ে আত্মহত্যা করবে বলে জানায়। পরবর্তীতে রাকিনের বন্ধুরা মিলে তাকে বোঝাতে ঢাকায় ক্যান্টনমেন্টের বাসায় আসলেও ততক্ষণে রাকিন আত্মহত্যা করে বসে। এ বিষয়ে রাকিনের মায়ের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক নেহাল করিম বলেন, আমাদের মধ্যবিত্ত এবং নিম্ন মধ্যবিত্তদের মধ্যে এই সংকট বিশেষ করে হীনমন্যতাটা বেশি। কোনো একটি বিষয় চেয়ে পরিবারের সদস্যদের কাছে পেলাম না। একটি প্রতিযোগিতার মধ্যে থাকে আমাদের ছেলেমেয়েরা। সহপাঠীদের আছে- আমার নেই। অথচ তার বাবার চাহিদা পূরণের ক্ষমতা আছে কিনা সেটা এখনকার ছেলেমেয়েরা বোঝার চেষ্টা করে না। পাশাপাশি করোনার মধ্যে দীর্ঘ সময় ঘরবন্দি থাকার কারণে ছেলেমেয়েদের মধ্যে একঘেয়েমি থেকে নানা সমস্যা দেখা গেছে। এক্ষেত্রে পারিবারিক এবং নৈতিক শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। সন্তানকে পর্যাপ্ত সময় দিতে হবে। কোন্‌টা ভালো- কোন্‌টা মন্দ এটা তাদেরকে বোঝাতে হবে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত