কভিড-১৯-এর টিকা : সংশয় ও বাস্তবতা

মানব ইতিহাসের সবচেয়ে প্রলয়ঙ্করী ও আতঙ্ক সৃষ্টিকারী রোগের নাম কভিড-১৯, যার থাবায় সারা পৃথিবীর মানুষ বিপর্যস্ত, বিধ্বস্ত ও পর্যুদস্ত। এ মহামারী সারা বিশ্বে কেড়ে নিয়েছে প্রায় ৩২ লাখ মানুষের প্রাণ এবং আক্রান্ত করেছে প্রায় ১৫ কোটি মানুষকে। সর্বকালের অন্যতম ভয়াবহ এ মহামারীর ছোবলে থেমে গেছে সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ধর্মীয়সহ মানুষের সব ধরনের কর্মকান্ড। করোনাভাইরাসের থাবায় বিজ্ঞানী ও চিকিৎসকরা হয়েছেন বিপর্যস্ত, দিশাহারা এবং জনগণ হয়েছে অসহায় ও আতঙ্কগ্রস্ত। আর সব ক্ষেত্রে ধ্বংসাত্মক এ মহামারী থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় হচ্ছে প্রতিকার প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থাসহ কার্যকর টিকা গ্রহণ। আগে সারা পৃথিবীতে বিভিন্ন সংক্রামক রোগের টিকা আবিষ্কারে দীর্ঘ সময় লাগত, কোনো কোনো ক্ষেত্রে বছরের পর বছর, এমনকি পাঁচ থেকে ১০ বছর পর্যন্তও লাগত। তাই মানুষের মধ্যে সংশয় ছিল কভিড-১৯-এর টিকা দ্রুততম সময়ে আদৌ আবিষ্কার সম্ভব হবে কি না। কিন্তু বর্তমানে বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তির অভূতপূর্ব উন্নতির ফলে দ্রুততম সময়ে এ ভাইরাসের বিরুদ্ধে টিকা মানুষ পেয়েছে মাত্র এক বছরের কম সময়ে। আবার সত্যিকারেই যখন টিকা আবিষ্কৃত হলো তখন মানুষের মধ্যে টিকার কার্যকারিতা, সরবরাহ, সংরক্ষণ, কত ডোজ টিকা নিতে হবে এসব নিয়ে সংশয় ও দ্বিধাদ্বন্দ্ব দেখা দিল। এ ছাড়া যে কোনো টিকা নিলে কমবেশি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ঝুঁকি থাকে, সুতরাং করোনাভাইরাসের টিকা নিলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হবে কি না, তাই টিকা নেওয়া যাবে কি না এ নিয়েও অনেক মানুষ দ্বিধাদ্বন্দ্বে ছিল। আবার গরিব বা উন্নয়নশীল দেশের লোকজন ভাবতে শুরু করল টিকা আবিষ্কৃত হলে তারা আদৌ সময়মতো পাবে কি না, কারণ উন্নত-ধনী দেশগুলো সবার আগে বেশির ভাগ টিকাই নিজেদের জন্য কিনে নেবে, এমনকি প্রয়োজনের চেয়েও অনেক বেশি টিকা আগাম সংগ্রহ করে রাখবে। ফলে গরিব বা উন্নয়নশীল দেশের মানুষের টিকা প্রাপ্তির নিশ্চয়তা নিয়ে সংশয় ছিলই। কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শিতা, প্রজ্ঞা, দৃঢ় প্রচেষ্টা ও সময়োপযোগী সিদ্ধান্তে বাংলাদেশে টিকা প্রাপ্তি নিশ্চিত হওয়ার পর আবার জনগণের মধ্যে অপপ্রচারের মাধ্যমে বিভ্রান্তি ছড়ানো হলো যে টিকায় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হচ্ছে, এমনকি পৃথিবীর কিছু দেশে লোক মারা গেছে এ খবরও গণমাধ্যমে প্রচার করা হলো। এমনকি টিকা দিলে শরীরের বিভিন্ন অংশে রক্ত জমাট বেঁধে যাচ্ছে এমন খবরও প্রচার হয়েছিল, যদিও বৈজ্ঞানিকভাবে তা এখনো প্রমাণিত নয়। ফলে মানুষের মাঝে টিকা নেওয়া নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্ব, আতঙ্ক ও ভয়ভীতির সৃষ্টি হলো। অনেকেই ভাবল তারা আদৌ টিকা নেবে কি নেবে না। কিন্তু সব অপপ্রচার উপেক্ষা করে দেশের সব জেলা-উপজেলায় যখন সুষ্ঠুভাবে টিকাদান কার্যক্রম শুরু হলো তখন মানুষ আস্তে আস্তে ভয়ভীতি উপেক্ষা করে স্বতঃস্ফূর্তভাবে টিকা নিতে শুরু করল। কিন্তু মার্চ-এপ্রিলে ভারতে কভিড-১৯ মহামারী খুব ভয়াবহ আকার ধারণ করায় হঠাৎই ভারত সরকার টিকা রপ্তানি বন্ধের ঘোষণা দিলে বাংলাদেশের টিকা প্রাপ্তি নিয়ে উদ্বেগ দেখা দেয় এবং জনগণের মধ্যে আবারও সংশয় দেখা দেয় যে তারা দ্বিতীয় ডোজ পাবে কি পাবে না এবং যারা টিকা নেয়নি তারা প্রথম ডোজও নিতে পারবে কি না। যদিও সরকার অন্যান্য উৎস থেকে অন্য টিকা সংগ্রহের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এবং অন্য উৎস থেকে টিকা প্রাপ্তির নিশ্চয়তা পাওয়া গেছে। তাই টিকা প্রাপ্তি একটু দেরিতে হলেও এ নিয়ে আশা করি কোনো সমস্যা হবে না। ভবিষ্যতে পর্যায়ক্রমে সারা দেশের সর্বস্তরের মানুষ অবশ্যই টিকা পাবে। এ ছাড়া আগামীতে অন্য দেশের ওপর টিকার আমদানিনির্ভরশীলতা কমিয়ে আমাদের দেশেই টিকা উৎপাদন যেন করা যায় সেদিকে সজাগ দৃষ্টি দিতে হবে এবং বাস্তব পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। আমাদের দেশের জনগণের চাহিদা মিটিয়ে প্রয়োজনে বিদেশেও টিকা রপ্তানি করা সম্ভব হবে, এমনকি বিনামূল্যে অন্যান্য গরিব দেশের মানুষকে টিকা সরবরাহ করা সম্ভব হবে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও