নায়ক
মনে হয় দুই চোখের আলোয় দিব্যি দেখতে পাচ্ছি ঝলমলে অতীত। আমার এইচএসসি পরীক্ষা শেষ হয়েছে মাত্র। ১৯৮০ সালের মে-জুনে কিশোরগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী গুরুদয়াল সরকারি কলেজ থেকে পরীক্ষা দিই। পরীক্ষার সময় বন্ধুদের সঙ্গে কলেজের টিনশেড হোস্টেলে ছিলাম। তখন বাড়ি থেকে প্রায়ই ট্রেনে কিশোরগঞ্জ শহরে আসা-যাওয়া করতাম। একদিন চোখে পড়ে শহরের গৌরাঙ্গবাজার এলাকার রাস্তায় হকাররা হরেকরকম পোস্টার বিক্রি করছে। আসুন সস্তা দামে নিন, মহানায়ক উত্তমকুমারের ছবি। এই তো সেদিন মারা গেছেন। মহানায়ক উত্তমকুমার- মহানায়ক, মহানায়ক ইত্যাদি, ইত্যাদি। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখলাম, বেশ কজন প্রবীণ লোক পোস্টার কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। হলুদ পাতলা কাগজে এক পৃষ্ঠার পোস্টার সাইজ রঙিন ছবি। এটি উত্তমকুমারের শেষ দিকের ছবি ‘অমানুষ’ বা ‘আনন্দ আশ্রমে’ তাঁর চেহারাটি যেমন হয়েছিল সে রকম ছবি। তখন পর্যন্ত তাঁর নাম শুনে থাকলেও কোনো ছবি দেখার সুযোগ হয়নি আমার। কিছুদিন পর শহরেই মামার বাসায় গিয়ে দেখি সেই পোস্টার সাইজ ছবিটি তাঁদের ড্রয়িংরুমে ঝুলে আছে। আমার চাকরিজীবী মামা নিজেই নাকি সম্প্রতি সংগ্রহ করে এনেছেন। এবং অনেক বছর ধরে ছবিটি মামার বাসায় আমিও দেখে এসেছি।