
তর্কযুদ্ধে রাষ্ট্রের চেহারা
দৃশ্যটা খুব পরিচিত নয়। ডাক্তারের পোশাক পরা এক নারী প্রাণপণ চিৎকার করে চলেছেন, পুলিশ এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে। ভিডিওটি শুধু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমই নয়, মূলধারার গণমাধ্যমেও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। ঠিক কী কথা দিয়ে আলাপের সূচনা হয়েছিল, সেটি ভিডিওতে না থাকলেও অনুমান করতে পারি। দেশে ‘কঠোর লকডাউন’ চলছে। মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণে সরকার মুভমেন্ট পাস চালু করেছে। এর আওতায় সব নাগরিক রাস্তায় বেরোলে মুভমেন্ট পাস দেখাতে বাধ্য, ১৮ পেশার মানুষ ছাড়া। প্রথম দিন চিকিৎসক এবং চিকিৎসার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা কর্মক্ষেত্রে যাওয়ার সময় বাধার সম্মুখীন হলে সরকার পরে আবারও ঘোষণা দিয়ে বিষয়টি পরিষ্কার করে। এর মধ্যে এই ভিডিওটি ভাইরাল হয় যেখানে প্রচণ্ড বাগ্বিতণ্ডার মধ্যেও কিছু জিনিস খুব স্পষ্ট।
১. ভিডিওতে না থাকলেও আমরা বুঝতে পারি চিকিৎসককে ভ্রাম্যমাণ আদালত থামিয়েছিল এবং তার পেশার পরিচয়পত্র চেয়েছিল। এরপর আমরা ভিডিওতে দেখি চিকিৎসক তার গাড়ির উইন্ডশিল্ডে সাঁটানো বিএসএমএমইউর ইস্যু করা লকডাউনের মুভমেন্ট পাস দেখান। একই সঙ্গে তিনি তার পরনে থাকা অ্যাপ্রোনটিতে লাগানো বিএসএমএমইউর লোগোর দিকেও বারবার দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেন। আমরা জানি বর্তমানের এই দুঃসময়ে নিজেদের জীবন বাজি রেখে কাজ করে যাচ্ছেন যারা তাদের মধ্যে শীর্ষস্থানে আছেন চিকিৎসক এবং হাসপাতালের অন্য সেবাদানকারী ব্যক্তরা। পৃথিবীর সব দেশ যখন এই ফ্রন্টলাইনারদের শুধু অর্থনৈতিক প্রণোদনাই নয়, বরং ভালোবাসা, সম্মান আর শ্রদ্ধাবনত চিত্তে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছে, তখন এই মানুষগুলোর প্রতি ন্যূনতম শ্রদ্ধা প্রদর্শনে আমরা ব্যর্থ হয়েছি। এমনকি করোনার শুরুতে করোনায় সেবাদানকারী চিকিৎসাকর্মীদের যে প্রণোদনার প্রতিশ্রুতি সরকার দিয়েছিল, আজ অবধি তা আলোর মুখ দেখেনি।
- ট্যাগ:
- মতামত
- হয়রানি
- চিকিৎসক
- ভ্রাম্যমাণ আদালত
- লকডাউন