প্রণাম
পরাধীন ভারতবর্ষে, ১৩২৮ বঙ্গাব্দে দোলযাত্রার প্রভাতে সদ্যোজাত আনন্দবাজারের প্রথম সংখ্যার সম্পাদকীয়তে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতার অংশবিশেষ প্রকাশিত হইয়াছিল। তৎপূর্ব দিবসেই গ্রেফতার করা হইয়াছিল মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীকে। তাঁহাকে গ্রেফতারের ঘটনা লইয়া সম্পাদকীয়তে উল্লিখিত হইয়াছিল কবির উদ্ধৃতি, ‘দেবতার দীপহস্তে যে আসিল ভবে/সেই রুদ্র দূতে, বলো কোন রাজা কবে পারে শাস্তি দিতে! বন্ধন শৃঙ্খল তার, চরণ বন্দনা করি, করে নমস্কার— কারাগার করে অভ্যর্থনা’। ইহা কেবলই দূরদ্রষ্টা কবির শ্রদ্ধাজ্ঞাপন নহে, পরাধীন দেশবাসীকে সাহস জোগাইবার মন্ত্রও। নূতন সংবাদপত্রের পৃষ্ঠা ছিল রক্তিম। ইংরেজ রাজপুরুষেরা অনুধাবন করিয়াছিলেন যে, এই রং বিপদসঙ্কেতও বটে। শৃঙ্খলিত মাতৃভূমি, বিভাজনের বেদনাসম্বলিত স্বাধীন দেশে ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্যে সেই মন্ত্র, একাধারে সম্প্রীতি এবং প্রতিবাদের সেই রং আনন্দবাজার রক্ষা করিতেছে। মস্তক উন্নীত, শিরদণ্ড ঋজু রাখিবার শিক্ষা দিয়াছিলেন যাঁরা, সেই প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক শ্রীপ্রফুল্লকুমার সরকার এবং প্রতিষ্ঠাতা শ্রীসুরেশচন্দ্র মজুমদারকে প্রণাম জানাইয়া অদ্য আমাদের শতবার্ষিকীর সূচনা হইল।