কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

চা গবেষণা কেন্দ্রের চার কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ

মানবজমিন শ্রীমঙ্গল প্রকাশিত: ২৭ আগস্ট ২০২০, ০০:০০

বাংলাদেশ চা বোর্ডের অধীনস্থ শ্রীমঙ্গলের চা গবেষণা কেন্দ্রের চার কর্মকর্তার নামে ঘুষের চাহিদাসহ অনৈতিক আবদার না রাখার জন্য অন্যায়ভাবে ঠিকাদারি কাজের বিল কর্তনের অভিযোগ করেছেন মেসার্স মিম্মা এন্টারপ্রাইজ-এর স্বত্বাধিকারী জিয়াউর রহমান জুয়েল নামের এক ঠিকাদার। গতকাল বুধবার বাণিজ্য সচিব, দুদক চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ চা বোর্ড-এর চেয়ারম্যান এবং রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআই’র মহাপরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। শ্রীমঙ্গলের চা গবেষণা কেন্দ্রের চার কর্মকর্তা হলেন- সহকারী প্রকৌশলী নয়ন আহমদ, মুখ্য বিজ্ঞানী ড. ইসমাইল হোসেন, উদ্ভিদ বিজ্ঞানী ড. সাইফুল ইসলাম, সহকারী ফ্যাক্টরি করণিক শফিক। লিখিত অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, “গত ৩১-১২-২০১৯ইং তারিখে বিআরটিআই-এর সূত্র নং -বিটিআরআই ১০/৫ম-১/৬০/ডি টাইপ ১৯৮ ‘আবাসিক বাসাবাড়ি সমূহের মেরামত ও সংস্কার কাজ’-এর দরপত্রের সর্বনিম্ন দরপত্র দাতা মনোনীত হয়ে গত ২৬-০১-২০২০ইং তারিখে চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেন। গত ২৮শে জানুয়ারি কাজের অর্ডার (কার্যাদেশ) পেয়ে কাজের গুণগত মান ১০০ ভাগ নিশ্চিত করে কাজটি সম্পূর্ণ সম্পন্ন করেন। কিন্তু কাজটি চলাকালীন বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে তাকে উপরোল্লেখিত ব্যক্তিগণ (প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা) হয়রানি করতে থাকেন। এমন কি ৬ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। একপর্যায়ে তার কাছ থেকে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজারসহ কয়েকজনের সম্মুখে ১ এক লাখ  টাকা গ্রহণ করেন।”এই ঘটনায় তিনজন চাক্ষুষ স্বাক্ষী রযেছেন দাবি করে জুয়েল অভিযোগে আরো উল্লেখ করেন- “ওয়ার্ক অর্ডার অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ের আগেই তার প্রতিষ্ঠান কাজ সমাপ্ত করে। কর্তৃপক্ষের নিকট কাজ সমাপ্ত হয়েছে বলে এবং কাজের মাপজোক করার জন্য আবেদন করা হলে সহকারী প্রকৌশলী নয়ন আহমদ তার অনুপস্থিতে না জানিয়ে কাজের মাপজোক করে মেজারমেন্ট বুক তৈরি করেন। গত ২০শে জুন  রানিং বিল গ্রহণ করতে গেলে ভয়ভীতি দেখিয়ে এবং মানসিকভাবে হয়রানি করে ম্যাজারমেন্ট বুকে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করার চেষ্টা করেন নয়ন। বিল হাতে নিয়ে তিনি দেখেন ঘুষ হিসেবে ৬,০০,০০০ (ছয় লক্ষ ) টাকা প্রদান না করায় দরপত্র এবং ওয়ার্ক অর্ডারে লিপিবদ্ধ প্রাপ্য বিল  ২৬,৭৮,৭৮০.৬০ (ছাব্বিশ লক্ষ আটাত্তর হাজার সাতশত আশি টাকা ষাট পয়সা) টাকার পরিবর্তে ১৬,৫৭,৩৫৫.৫১ (ষোল লক্ষ সাতান্ন হাজার তিনশত পঞ্চান্ন টাকা একান্ন পয়সা) টাকার বিল করা হয়েছে। আরো দেখতে পান, তার প্রতিষ্ঠান কর্তৃক কাজের পরিমাপের সঙ্গে সহকারী প্রকৌশলীর তৈরি মেজারমেন্ট বুকের ব্যাপক অমিল রয়েছে। বিলের এই আকাশ-পাতাল তারতম্য এবং মনগড়া মেজারমেন্ট দেখে তিনি স্বাক্ষর দেয়া এবং বিল গ্রহণে অসম্মতি জানান। তখন নয়নসহ উল্লিখিত কর্মকর্তারা তাকে বলেন, এই টাকা না নিলে আর একটা টাকাও দেয়া হবে না। ইচ্ছে হলে যেন বিল গ্রহণ করি, না হলে এক টাকাও বিল পাবেন না। তখন ব্যাংক ঋণের কথা চিন্তা করে এবং তাদের নানান ভয়ভীতি আর চাপে বাধ্য হয়ে বিল গ্রহণ করি। উল্লিখিত অভিযুক্ত ব্যক্তিগণের যোগসাজশে বিলে আমার প্রতিষ্ঠান কর্তৃক সম্পূর্ণ কাজের পরিমাপে অনেক কম পরিমাপ ধরে এবং অনেক সম্পন্ন করা কাজকেও  হিসাবে না ধরে মেজারমেন্ট বুক তৈরি করেন। উদাহরণস্বরূপ ১২টি প্লাস্টিক ডোর, সাপ্লাই, ফিটিংস, ফিক্সিং করা হলেও মেজারমেন্ট বুকে ৫টি বাদ দিয়ে ৭ টি প্লাস্টিক ডোর, সাপ্লাই, ফিটিংস, ফিক্সিং করেছে বলে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। এ রকম আরো অনেক আইটেম যেমন প্লাস্টার, ড্যাম্প প্রুফ কোর্স, ইটের গাথুনী, সিসি কাস্টিং, নিট ফিনিশিং, এপ্রোন ড্রেন, কাঁচের দরজা, জানালার ফ্রেম, পাল্লা, বোর্ড সিলিং, বারান্দা লিপার, প্লাস্টিক ডোর, আউটার নেট, রঙের কাজ, জানালার গ্রীল, গ্লাস, খুঁটি, হ্যাচবল্ট সিটকিনি, টুল্লী, কনসিল্ড ওয়ারিং, পাইপ ফিটিংস, ইলেকট্রিক ক্যাবলস্‌, দরজা-জানালা পর্দার পাইপ, ভেন্টিলেটর ইত্যাদি।” ঠিকাদার জিয়াউর রহমান জুয়েল বলেন, আমার কাজের ইচ্ছাকৃত ভুল পরিমাপ ধরে বিল তৈরি করে আমাকে জোরপূর্বক বিল বইতে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করা হয়। আমার অভিযোগের শতভাগ সত্যতা পাওয়া যাবে যদি নিরপেক্ষ তদন্ত করা হয়। আমি মানসিক ও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ঋণ গ্রহণ করতে বাধ্য হয়েছি। বর্তমানে আমি অর্থ সম্পদ হারিয়ে এবং ব্যাংকের দেনার চাপে দেউলিয়া। আমি হলফ করে বলছি সঠিক তদন্ত করলেই আমার প্রত্যেকটা কাজের বাস্তব প্রমাণ খুঁজে পাওয়া যাবে। তাই সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে আমার প্রতি হওয়া অবিচারের ন্যায়বিচার চাই, পাশাপাশি এসব অসৎ কর্মকর্তার যথাযথ শাস্তি চাই। এদেরকে শাস্তির আওতায় এখনি না আনা গেলে ভবিষ্যতে শ্রীমঙ্গল চা গবেষণা কেন্দ্রের উন্নয়ন ও অগ্রগতি হুমকির মুখে পড়বে, পাশাপাশি এতদিনের ধারাবাহিক সুনাম ধূলিসাৎ হয়ে যাবে চা বোর্ড।এ ব্যাপারে মুখ্য বিজ্ঞানী ড. ইসমাইল হোসেনের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি ফোন (০১৭৪৯৫১৫৩০৫) রিসিভ না করে বন্ধ করে দেন।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও